রাজনীতির দাবা খেলায় বিএনপি হেরে গেলেও ষড়যন্ত্র থামেনি

গাংনীতে ওয়ার্কার্সপাটির জনসভায় কেন্দ্রীয় সদস্য কমরেড মজিবর রহমান বকুল

গাংনী প্রতিনিধি: বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরো সদস্য নুর আহমদ বকুল বলেছেন, রাজনীতি হচ্ছে দাবা খেলা। এই দাবা খেলায় বিএনপি হেরে গেলেও ষড়যন্ত্র থেকে পিছু হটেনি। তিনি অভিযোগ করেন, রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে নতুন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে বিএনপি। গতকাল শুক্রবার বিকেলে মেহেরপুর গাংনী উপজেলার হেমায়েতপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি বিএনপির বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শরীফ উদ্দীন ঠা-ু। বিশেষ অতিথি ছিলেন ওয়ার্কার্স পার্টির সদস্য কমরেড মজিবর রহমান, মেহেরপুর জেলা ওয়ার্কার্স পার্টি সাধারণ সম্পাদক কমরেড আব্দুল মাবুদ, কুষ্টিয়া জেলা ওয়ার্কার্স পার্টি সভাপতি ফজলুল হক বুলবুল ও কুষ্টিয়া জেলা যুবমৈত্রীর সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রানা।
প্রধান অতিথি বক্তৃতায় বলেন, ইসলামের নামে অপপ্রচার চলছে দীর্ঘদিন ধরেই। বর্তমান সরকার অসাম্প্রদায়িক চেতনা প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কৃষিবান্ধব সরকারের সদিচ্ছা ও কৃষকের রক্তঘামে বাংলাদেশর খাদ্য সংকট দূর হয়েছে। তবে দেশের বন্যাজনিত কারণে চালের বাজারে অস্থিরতা চলছে। সরকার আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারলেই তা সমাধান হবে। খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামকে অপদার্থ আখ্যায়িত করে ৯০’র স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম এই নেতা বলেন, অটো মিল মালিকরা মন্ত্রীর সাথে বৈঠকে বসে চালের দাম এক টাকা কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এর বিনিময়ে চটের বস্তার পরিবর্তে পরিবেশ ধ্বংসকারী প্লাস্টিক বস্তা ব্যবহারের অনুমতি নিয়েছেন। ফলে বিরূপ প্রভাব পড়েছে পাটের বাজারে। পাটের দর পড়ে গেছে। মিল মালিক ও চাল ব্যবসায়ীরা দেশের কথা ভাবেন না। তারা শুধুই ব্যবসা বোঝেন। এদের সাথে কিসের সখ্য আমাদের খাদ্যমন্ত্রীর।
নোবেল জয়ী অং সান সু চির তীব্র সমালোচনা করে এমপি প্রার্থী নুর আহমদ বকুল বলেন, সু চির বাবা অং সানের প্রতি সহানুভূতির কারণেই রোহিঙ্গা মুসলিমরা দ্বিতীয় বিশ^যুদ্ধের সময় জাপানকে সমর্থন করে। পরবর্তীতের ১৯৪৮ সালে বার্মা (বর্তমান মিয়ানমার) স্বাধীনতা অর্জন করলে ক্ষমতার লোভে অং সান রোহিঙ্গাদের সাথে বেঈমানি করেন। এতে রোহিঙ্গাদের জীবনে দুর্দশা নেমে আসে। এখন আন্তর্জাতিক ব্যবসা প্রসারের কারণেই রোহিঙ্গাদের দেশছাড়া করা হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবতাবাদী নেত্রী হিসেবে তাদের আশ্রয় দিয়েছেন। এটি নিয়ে ষড়যন্ত্রমূলক রাজনীতি না করার জন্য বিএনপির প্রতি আহ্বান জানান তিনি। কৃষক সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমাদের অধিকার আমাদের আদায় করে নিতে হবে। কৃষক ও ফসল বীমাসহ চাষিদের দুর্দশামুক্ত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি করেন তিনি।
বক্তৃতায় কমরেড আব্দুল মাবুদ গাংনী পল্লী বিদ্যুত, খাদ্য গুদাম ও হাসপাতালের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ওয়ার্কার্স পার্টি গৃহীত পদক্ষেপ তুলে ধরে বলেন, দেশের অধিকাংশ মানুষই কৃষির সাথে জড়িত। তাদেরকে পেছনে ফেলে রেখে উন্নয়ন সম্ভব নয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন কমরেড মজনুল হক। জনসভায় ওয়ার্কার্স নেতাকর্মীসহ এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।