যৌতুকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান

 

যৌতুক একটি সামাজিক ব্যাধি। এর করাল গ্রাস থেকে কেইই রক্ষা পাচ্ছে না। কারণ আমাদের সমাজে শিক্ষিত, অশিক্ষিত, ধনী, দরিদ্র, সকল স্তরেই কমবেশি আইন ও লোক চক্ষুর অগোচরে যৌতুক আদান প্রদান হচ্ছে। যৌতুক বলতে বোঝায় বিবাহের সময় বা বিবাহের পূর্বে বা পরে বিবাহের প্রতিদান স্বরূপ যেকোনো পক্ষ কর্তৃক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে দিতে সম্মত বা প্রদত্ত অথবা গৃহীত কোনো সম্পত্তি বা মূল্যবান জামানত। এখন জানা যাক যৌতুক রোধ কল্পে বিদ্যমান আইনের বিধান। ১৯৮০ সালের যৌতুক নিরোধ আইনের ৪ ধারা অনুযায়ী- এই আইন কার্যকরী হওয়ার পর কোনো ব্যক্তি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কনে বা বরের পিতা-মাতা বা অভিভাবকের নিকট যৌতুক দাবি করলে সে সর্বাধিক পাঁচ বছর এবং এক বছরের নিম্নে নহে মেয়াদের কারাদণ্ড বা জরিমানা অথবা উভয়বিধ প্রকারে দণ্ডনীয় হবে। এ আইনে স্বামী/স্ত্রী একে অপরের বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা দায়ের করতে পারবে। এ মামলা প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্টেট আদালতে বিচার হবে।

এবার জানা যাক নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) আইন, ২০০৩-এর বিধান। এ আইনের ১১ ধারা অনুযঅয়ী যদি কোনো নারীর স্বামী অথবা স্বামীর পিতা, মাতা, অভিভাবক, আত্মীয় বা স্বামীর পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি যৌতুকের জন্য ওই নারীর মৃত্যু ঘটান বা মৃত্যু ঘটানোর চেষ্টা করেন তা হলে ওই স্বামী, স্বামীর পিতা-মাতা, অভিভাবক, আত্মীয় বা ব্যক্তি-

ক) মৃত্যু ঘটানোর জন্য মৃত্যুদণ্ডে বা মৃত্যু ঘটানোর চেষ্টার জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন এবং উভয় ক্ষেত্রে দণ্ডের অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হবেন।

খ) মারাত্মক জখম করার জন্য যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে অথবা অনধিক বার বছর, কিন্তু অন্যূন পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন এবং ওই দণ্ডের অতিরিক্ত অর্থদণ্ডের দণ্ডনীয় হবেন।

গ) সাধারণ জখম করার জন্য অনধিক তিন বছর। কিন্তু অন্যূন এক বছর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন এবং ওই দণ্ডের অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হবেন।

এটি নারীদের সুরক্ষা আইন। তাই যৌতুকের জন্য আর কোনো নির্যাতন সহ্য নয়, নয় কোনো আত্মহ্যা। চাই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণরে দৃঢ় মানসিকতা।