মোবাইলফোনে প্রতারণা : রাতারাতি ধনী হতে গিয়ে ফতুর হলেন দামুড়হুদা ভগিরথপুরের কৃষক আসলাম আলী

তৌহিদ তুহিন: রাতারাতি ধনী হওয়ার স্বপ্ন ভেস্তে গেলো দামুড়হুদার নতিপোতা ইউনিয়নের ভগিরথপুর গ্রামের ব্রিজপাড়ার কৃষক আসলাম আলীর। ১০ লাখ টাকা পাওয়ার লোভে কথিত পীর বাবার নাম্বারে ৩৫ হাজার টাকা বিকাশ করে এখন হায় হায় করছেন। গরু ও পাট বিক্রি করে এ টাকা প্রতারক পীর বাবার নাম্বারে বিকাশ করে দেন প্রতারিত আসলাম।

জানা গেছে, দামুড়হুদার ভগিরথপুরের মৃত মুনচুর আলীর ছেলে আসলামের কাছে গত শুক্রবার রাত ১টার দিকে আসলামের ব্যবহৃত মোবাইলফোনে ০১৭৬৪-৭১৫৪৮১ নম্বর থেকে ফোন আসে। কয়েক বার রিং বাজলেই ফোন ধরেন আসলাম। অজ্ঞাত স্থান থেকে বলা হয় প্রথম আসমান থেকে পীর বাবার কথামতো আমি জিনের বাদশা বলছি। তোমার বাড়ির উন্নতির ছোঁয়া পেতে একটি মুরগি জবাই করে নাবালক ছেলেমেয়েদের খাওয়াতে হবে। এ কথা শুনে আসলাম তার কথামতো নিদের্শ পালন করে। একদিন পর গত রোববার ফোন করে জিনের বাদশা রাত ২টার দিকে আসলাম ধরলে অজ্ঞাত স্থান থেকে জানান, পীর বাবা সন্তুষ্ট হয়ে ১০ লাখ টাকা তোমার বাড়ির আশপাশে মাটির নিচে পুতে রেখেছে। আমার কথা শুনলে প্রথমে পাবে ১০ লাখ টাকা আর কয়েক দিন পর পাবে আরও  ২০ লাখ টাকা।

কিন্তু কিছু শর্ত  আছে, এ কথাগুলো কাউকে বললে তোমার পরিবারে বড় ধরনের ক্ষতি হবে এবং পীর বাবা অসন্তুষ্ট হবে। একদিকে ধনী হওয়ার শখ, অপরদিকে ক্ষতি। এ কথা শুনে লোভী আসলাম আলী ধনী হওয়ার স্বপ্নে বিভোর হয়ে দরিদ্র কৃষক গরু ও পাট বিক্রি করে। বিক্রি করার সময় প্রতিবেশীরা জিজ্ঞাসা করে, ছোট গরু বিক্রি করে টাকা কী হবে? জানতে চাইলে হাসি মুখে আসলাম জানান, আমি বড় মোটরসাইকেল কিনবো তাই গরু বিক্রি করছি। গত সোমবার ভালাইপুর থেকে বিকেলে দু’বারে ৩৫ হাজার টাকা বিকাশ করে দেন আসলাম। বিকাশ করার সময় কথা হয় জিনের বাদশার সাথে আসলামের। জিনের বাদশা জানায়, পীর বাবার কথামতো আমি সোমবার রাত ৩টার দিকে তোমার বাড়িতে ছোট বাচ্চা (পুত্র সন্তান) রূপে আসছি। জিনের বাদশাকে খাওয়ানোর জন্য নাস্তার ব্যবস্থা করা হয়। ঘরের ভেতর পরিষ্কার করে জায়নামাজ পেতে আগরবাতি ধরিয়ে রাখেন আসলাম। কিন্তু সকালে আসলাম আলী ঘুম থেকে উঠে দেখেন কেউ আসেনি। সকাল বেলা এ খবর সবাই শুনলে মুখরিত খবরে পরিণতি হয়। এলাকার মানুষ তাকে দেখতে তার বাড়িতে ভিড় জমায়। অসহায় আসলাম আলী সহায় সম্বল বিক্রি করে সে এখন অসহায় জীবনযাপন করছেন।