মেহেরপুরের দুই-তৃতীয়াংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার

সারা বছর থাকে অযত্নে-অবহেলায় : শেষ মুহুর্তে চলছে ঘষা-মাজা ও রঙের কাজ
মহাসিন আলী: আগামীকাল বুধবার ২১ ফেব্রুয়ারি আমাদের শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা দিবস। দিনটি পালন উপলক্ষে সরকারিভাবে নানা কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। তাই শেষ মুহুর্তে মেহেরপুরের গ্রামে-গঞ্জে যেসব স্কুল-কলেজ ও মাদরাসায় শহীদ মিনার আছে সেখানে চলছে শেষ মুহুর্তের ঘষা-মাজা ও রঙের কাজ। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য মেহেরপুরের এমপিওভূক্ত ১৫৯টি স্কুল-কলেজ ও মাদরাসার মধ্যে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। আর যেসব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার রয়েছে সেগুলোও সারা বছর অযতœ ও অবহেলায় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পড়ে থাকে। আবার সাংবাদিক দেখে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান আগামী বছরের মধ্যে তার প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করবেন বলে জানান।
মেহেরপুর জেলার মোট ৩টি উপজেলার সরকারি ও এমপিওভূক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৫৯টি। এদের মধ্যে মাত্র ৫৬টিতে রয়েছে শহীদ মিনার। বাকিগুলোতে নেই। মেহেরপুর জেলায় রয়েছে ১২২টি মাধ্যমিক ও নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। যার মধ্যে মাত্র ৪২টিতে রয়েছে শহীদ মিনার। সরকারি ও এমপিওভূক্ত কলেজ রয়েছে ১৫টি। যার মধ্যে শহীদ মিনার রয়েছে মাত্র ৯টিতে এবং মাদরাসা রয়েছে ২২টি। যার মধ্যে শহীদ মিনার রয়েছে ৫টিতে।
শেষ মুহুর্তে বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও মাদরাসায় গিয়ে দেখা গেছে শহীদ মিনারগুলোতে ঘষা-মাজা, ধোয়া-মুছা ও রঙের কাজ চলছে। মেহেরপুর সদর উপজেলার গোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কামদেবপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ বেশকিছু বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে শহীদ মিনার নেই। প্রতিষ্ঠান দু’টির প্রধান আবুল কাশেম ও ই¯্রাইল হোসেন জানালেন, বিভিন্ন সমস্যার কারণে এতোবছর শহীদ মিনার বানানো হয়নি। সরকারের পক্ষে জেলা অফিস প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী বছর ২১ ফ্রেব্রুয়ারির মধ্যে আমরা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার তৈরি করবো।
মেহেরপুর জেলা উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি রফিক-উল আলম জানান, প্রাথমিকের পরে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকা উচিত। আমরা আশা করব যেসব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আজও করা হয়নি তারা আগামী বছরের মধ্যে শহীদ মিনার করবেন। তিনি আরও বলেন, শুধু শহীদ মিনার করলেই হবে না। সেগুলো পবিত্র স্থান মনে করে যতেœ রাখতে হবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শহীদ মিনার করেছেন। তবে যতেœ রাখেননি। শহীদ মিনারে বসে কেউ বিড়ি-সিগারেট খাচ্ছে, কেউ তাস, লুডু ও দাবা খেলছে। আবার অনেক সময় দেখা যায় ছাগল-ভেড়া ঘুমাতে। প্রতিষ্ঠান প্রধানদের উচিত হবে এটা রক্ষণাবেক্ষণ করা। তিনি আরও বলেন, শহীদ মিনারটি সাধ্য অনুযায়ী বাঁশ কিংবা লোহার বেড়া দিয়ে ঘিরে তার মধ্যে কিছু ফুলগাছ লাগালে প্রতিষ্ঠানের যেমন সৌন্দর্য বাড়ে, তেমনই শহীদ মিনারটিকে যতেœ ও পবিত্র রাখা যায়।
মেহেরপুরের জেলা শিক্ষা অফিসার (মাধ্যমিক) মো. আব্দুল মালেক বলেন, সরকারি নির্দেশে আমরা জেলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার করার জন্য চিঠি দিয়েছি। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নতুন তৈরি হয়েছে। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান আগামী বছর করবে বলে জানিয়েছেন।