মৃত্যুর আগেই কবরস্থান তৈরি করেছেন ঝিনাইদহ জেলা পরিষদের প্রশাসক

 

ঝিনাইদহ অফিস: পারিবারিক কবরস্থান, টাইলসে মোড়ানো দেয়াল। সমাধিফলকগুলো শ্বেতপাথরের তৈরি। পাঁচটি ফলকের প্রতিটিতে নাম ও জন্মতারিখ খচিত। দুটিতে জন্ম ও মৃত্যু তারিখ উল্লেখ আছে। বাকিগুলোতে মৃত্যুর তারিখের জায়গাটি ফাঁকা। কবরস্থান পাকাকরণ,টাইলসে মোড়ানো ও সমাধিফলক এসবই করিয়েছেন আবদুল ওয়াহেদ জোয়ারদার। তিনি জীবিত থাকলেও কবরের নামফলকে নিজেকে মরহুমলিখে রেখেছেন। যে তিনটিতে মৃত্যুর তারিখ লেখা হয়নি, তাঁরা সবাই বেঁচে আছেন। তার চেয়েও বড় কথা, তিনি এই পারিবারিক কবরস্থানটি পাকা করেছেন সরকারি টাকায়।

আবদুল ওয়াহেদ জোয়ারদার ঝিনাইদহের জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। তিনি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়নের ডেফলবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। ডেফলবাড়িয়া গ্রামের পশ্চিম পাড়ায় প্রায় এক শতাংশ জায়গার ওপর জেলা পরিষদের বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পের ২০১১-১২ অর্থবছরে এক লাখ ১৫ হাজার টাকায় পারিবারিক এই কবরস্থানটি নির্মাণ করেছেন তিনি। জেলা পরিষদের প্রশাসক হওয়ায় প্রকল্প অনুমোদন ও খরচ করার ক্ষমতা নিজের হাতেই রয়েছে তাঁর। এ কারণে উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা পারিবারিক কবরস্থান পাকাকরণে খরচ করেছেন বলে স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, ওই গ্রামের ঈদগাহের পাশে আনুমানিক এক শতাংশ জায়গায় পাঁচিল দেয়া হয়েছে। পাঁচিলের গায়ে মূল্যবান টাইলস দেয়া। এই কবরস্থানে আবদুল ওয়াহেদ জোয়ার্দ্দার তাঁর স্ত্রী লায়লা জোয়ার্দ্দারের নামেও জায়গা রেখে ফলক বানিয়েছেন। তাতে নামের আগে মরহুমাশব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। এ ছাড়া পরিবারের লোকজনের নামে আরও তিনটি ফলক রয়েছে।

তবে আবদুল ওয়াহেদ জোয়ার্দ্দার সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, কবরের মূল পাঁচিলের উন্নয়ন নিজের টাকায় করেছি। প্রকল্প থেকে এখানে টাকা ব্যয় করা হয়নি। ঈদগাহ ও কবরস্থান উন্নয়নের নামে কেউ টাকা তুলে থাকলে তা আত্মসাৎ করা হয়েছে।

জেলা পরিষদের তৎকালীন উপসহকারী প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ঈদগাহ ও কবরস্থান একই স্থানে হওয়ায় একসাথে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। প্রথম বরাদ্দে প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় দ্বিতীয় দফায় বরাদ্দ আনা হয়।