মুজিবনগরে ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করায় বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা

 

মুজিবনগর প্রতিনিধি: উত্যক্তের ঘটনায় মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার আম্রকানন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির এক ছাত্রী বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে। অভিযুক্ত একই স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র বায়েজিদকে গতকাল মঙ্গলবার পুলিশ গ্রেফতার করলেও লিখিত অভিযোগ না থাকায় ছেড়ে দেয়া হয়। তবে এ ঘটনার ব্যবস্থা নিতে আজ বসছে ম্যানেজিং কমিটির জরুরি বৈঠক। ঘটনা ধামাচাপা দিতে ছাত্রীর পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

ভুক্তভোগীসহ বিভিন্নসূত্রে জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে একই বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্র ভবেরপাড়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য ইউনুস আলী বগার ছেলে বায়েজিদ হোসেন ওই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলো। বিদ্যালয়ে এবং পথেঘাটে তার অত্যাচরে ছাত্রীর জীবন অতিষ্ট হয়ে উঠেছিলো। কয়েকদিন আগে বায়োজিদ তার বন্ধু শাকিলকে সাথে নিয়ে বিয়ের জন্য চাপ দেয় ওই ছাত্রীকে। তার প্রস্তাবে রাজি না হলে অপহরণের হুমকি দেয়। প্রতিকার না দেখে বখাটের ভয়ে শেষ পর্যন্ত আত্মহননের সিদ্ধান্ত নিয়ে রোববার ওই ছাপত্রী বিষপান করে। পরে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসায় সে সুস্থ হয়।

বায়েজিদের পরিচয় দিতে গিয়ে এলাকার বিভিন্ন মহল তার পরিবার সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়ে জানিয়েছেন, শিক্ষিকা ধর্ষণের মামলায় গ্রেফতার হওয়া মুজিবনগর আম্রকানন মাধ্যমিক বিদ্যাললের প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলামের ভাজিতা হচ্ছে বায়েজিদ। চাচা প্রধান শিক্ষক হওয়ায় মাধ্যমিক বিদ্যালয় জীবনের প্রথম থেকেই সে হয়ে ওঠে বেপরোয়া। ছাত্রীদের উত্যক্ত ও বিদ্যালয়ে বখাটেপনা করলেও প্রধান শিক্ষকের ভাতিজা তাই পার পেয়ে গেছে। এ কারণে দিনদিন সে সীমা ছাড়িয়ে গেছে বলে মন্তব্য অনেকের। এদিকে এ ঘটনায় গতকাল বায়েজিদকে গ্রেফতার করে মুজিবনগর থানা পুলিশ। কিন্তু ভুক্তভোগী পরিবার মামলা কিংবা অভিযোগ না করায় তাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

এলাকার বিভিন্নসূত্রে জানা গেছে, বায়েজিদের পরিবারের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ থাকায় তাদের দেখে গ্রামের দুর্বল মানুষগুলো ভীত থাকেন। ভুক্তভোগী পরিবারকে মামলা না করতে বায়েজিদের পরিবার থেকে যথাসাধ্য চাপ দেয়া হয়েছে। মামলা করলে বড় ধরণের ক্ষতির আশঙ্কা থাকায় পিছিয়ে যাচ্ছেন ভুক্তভোগীরা।

আম্ররকানন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফারুক হোসেন জানান, উত্যক্তের বিষয়টি শুনেছেন। উভয় পক্ষকে নোটিশ করা হয়েছে। আজ এ বিষয়ে বিদ্যালয়ে আলোচনা করে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে। তবে বায়েজিদের পিতার দাবি, বায়েজিদ নয় অন্য ছেলে ওই মেয়েকে বিরক্ত করতো। বিষয়টি তার ছেলের ওপর চাপানো হচ্ছে। বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম জানান, উভয় পক্ষকে ডাকা হয়েছে। বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।

মুজিবনগরের থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী কামাল হোসেন বলেন, বিষয়টি জানার পর হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ দেয়নি। তবে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত অব্যহত আছে।