মুজিবনগরে ঋণের কিস্তি দিতে না পারায় কৃষকের আত্মহত্যা

 

দরিদ্রতা ঘুচাতে আশা এনজিও থেকে টাকা নিয়েছিলেন কৃষক মোজাম্মেল

মুজিবনগর প্রতিনিধি: দরিদ্রতা ঘুচাতে আশা এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছিলেন কৃষক মোজাম্মেল হোসেন (৪০)। গবাদি পশু পালন ও চাষাবাদ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছিলেন তিনি। কিন্তু ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে হাফিয়ে উঠছিলেন তিনি। ঋণের টাকা বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করেও কাঙ্খিত লাভ আসেনি। যতোই দিন পার হচ্ছিলো ততোই ঋণের জালা বাড়ছিলো। ঋণ পরিশোধ করতে একটি গরু বিক্রি করেও নগদ টাকা মেলেনি। কিন্তু আশা এনজিও কর্মীরা ঋণ পরিশোধে চাপ দিচ্ছিলো। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েন মোজাম্মেল। জীবনের প্রতি বাড়তে থাকে ক্ষোভ ও বিতৃষ্ণা। এক পর্যায়ে বেছে নেন আত্মহননের পথ। গতকাল শুক্রবার তিনি বিষপান করে চলে গেছেন না ফেরার দেশে। তার পরিবারের পক্ষ থেকে আত্মহত্যার কারণ এভাবেই জানানো হয়েছে।

আত্মহননকারী কৃষক মোজাম্মেল মুজিবনগর উপজেলার পুরন্দরপুর গ্রামের মৃত আফসার হালসনার ছেলে। পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বিকেলে বাড়ির পাশের বাঁশ বাগানে সবার অজান্তে বিষ পান করে ছটফট করছিলেন মোজাম্মেল। প্রতিবেশীলা তাকে বল্লভপুর মিশন হাসপাতালে ভর্তি নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়।

মোজাম্মেল ও তার স্ত্রী সাবানা মিলে আশা এনজিও থেকে ছয় মাস মেয়াদী ৩০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। আজ শনিবার ঋণের সূদসহ ফেরত দেয়ার দিন ধার্য ছিলো। কিন্তু কোনোভাবেই সে টাকা জোগাড় করতে পারেনি। পরিশোধের দিন ঘনিয়ে আসতেই এনজিও থেকে বারবার তাগাদা দেয়া হচ্ছিলো। ঋণ পরিশোধের জন্য এলাকার এক ব্যাপারীর কাছে গরু বিক্রি করলেও তিনি টাকা পরিশোধ করেননি। তাই রাগে ক্ষোভে তিনি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন বলে ধারণা করছেন পরিবারের সদ্যস্যরা। এদিকে খবর পেয়ে মুজিবনগর থানা পুলিশের একটি দল লাশ তাদের হেফাজতে নেয়। তবে পরিবারের দাবির প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। এ ব্যাপারে তাদের কোন অভিযোগ নেই। মামলাও করার ইচ্ছে নেই বলে পুলিশে জানিয়েছে। এ বিষয়ে থানায় অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।