মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা নির্ধারণে আইন হচ্ছে

 

 

 

স্টাফ রিপোর্টার: মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রণালয় মুক্তিযোদ্ধাদের সংজ্ঞা নির্ধারণের উদ্যোগ নিয়েছে।অমুক্তিযোদ্ধা কেউ যাতে মুক্তিযোদ্ধার সনদ পেতে না পারে সেজন্য এ সিদ্ধান্তনেয়া হয়েছে। একটি খসড়া প্রস্তাবনা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।সংজ্ঞার বিষয়টি আইনে উল্লেখ থাকবে।এ প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রণালয়ের সচিব কেএইচ মাসুদ সিদ্দিকী মঙ্গলবার বলেন, মুক্তিযোদ্ধার সনদ প্রদান নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে নানা বিতর্ক চলে আসছে। কিছুকিছু অভিযোগ যে একেবারে অসত্য, তা নয়। ইতোমধ্যে কিছুসংখ্যক ভুয়ামুক্তিযোদ্ধা চিহ্নিত করে তাদের সনদ বাতিলসহ গেজেট থেকে নামও বাদ দেয়াহয়েছে। এ অবস্থায় একটি বিতর্কমুক্ত স্বচ্ছ ও নির্ভুল প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারতালিকা করার ক্ষেত্রে আইনের মাধ্যমে সংজ্ঞা নির্ধারণের কোনো বিকল্প নেই।এজন্য এ সংক্রান্ত আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, খসড়াপ্রস্তাবে মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় মুক্তিযোদ্ধার উপাধি বা সনদ পাওয়ার জন্যপ্রাথমিকভাবে আট ধরনের যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, যেসবব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করেট্রেনিং ক্যাম্পে নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়েমুক্তিযোদ্ধাদের উৎসাহ দিতে যেসব শিল্পী, সাহিত্যিক, খেলোয়াড়, চিকিৎসক, লেখক, সাংবাদিক বিদেশে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অবদান রেখেছেন। যারা মুজিবনগরসরকারের কর্মকর্তা-কর্মচারী হিসেবে ভূমিকা রাখা ছাড়াও বিভিন্ন দায়িত্ব পালনকরেছেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে যারা বিভিন্ন মুক্তিবাহিনীর সদস্য ছিলেন।যেমন- কাদেরিয়া বাহিনী, হেমায়েত বাহিনী, আনসার বাহিনী প্রভৃতি।আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে ভারতের ত্রাণশিবিরে অবস্থান করলেও পরবর্তীতেমুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন এমন ব্যক্তি। মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযুদ্ধেঅংশগ্রহণকারী পুলিশ, আনসার ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। মুক্তিযুদ্ধেঅংশগ্রহণকারী অথবা মুজিবনগর সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত সব গণপরিষদ সদস্য।সবশেষে বিশ্ব জনমত গঠনে সক্রিয় বাংলাদেশি নাগরিকরা।

এদিকেমুক্তিযোদ্ধাদের বিষয়ে আরও কিছু সিদ্ধান্ত আইনে উল্লেখ থাকবে। এগুলো হলোমুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধার নামের সাথে বীরমুক্তিযোদ্ধা খেতাব প্রদান। মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠনকে জনমত গঠন, রাষ্ট্রীয়দায়িত্ব পালন, সাংবাদিক, লেখক, গায়ক, শিল্পী, খেলোয়াড় ও আগরতলা ষড়যন্ত্রমামলায় অভিযুক্তদের রাষ্ট্রীয় খেতাব প্রদান করা। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়াসরকারি ও বেসরকারি ব্যক্তিদের অবদান বিবেচনা করে খেতাব প্রদান। বিদেশিবন্ধুদের সম্মাননা প্রদান অব্যাহত রাখা। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করার জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন এবং ২বছরের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তির বাধ্যবাধকতা নির্ধারণ করে দেয়া।মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের জন্য সেল গঠন এবং এই সেলের মাধ্যমেমুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত গল্প, প্রবন্ধ, নাটক, কবিতা পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্তকরা। নাটক, সিনেমা, মুভি, স্মৃতিকথা, গান লেখার জন্য সেল গঠন (মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন, ৬ দফা, ১১ দফা ইত্যাদি আন্দোলন), অসাম্প্রদায়িক চেতনা বাস্তবায়ন, পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ, অত্যাচার, বৈষম্য, সঙ্গীত, নাটক রচনায় সরকারি অনুদান প্রদান। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়শিশু, কিশোর, যুব, পেশাজীবী সংগঠন গঠন করা এবং অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিরফাউন্ডেশন-কর্তৃপক্ষ গঠন।