মুক্তিপণের টাকা দিয়েও বাঁচানো গেলো না স্কুলছাত্র রাতিমকে

স্টাফ রিপোর্টার: অপহরণকারীদের দাবিকৃত ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণের ১০ হাজার টাকা দিয়েও বাঁচানো গেলো না গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মুশফিক হোসের রাতিমকে। গতকাল শুক্রবার সকালে পুলিশ অপহরণের ৬ দিন পর স্কুলছাত্র মুশফিক হোসেন রাতিমের লাশ উপজেলার রতনপুর এলাকার কাইনারার একটি পুকুর থেকে উদ্ধার করেছে।

রাতিমের লাশ উদ্ধারের পর মৌচাক এলাকার আব্দুর রাজ্জাক মিয়ার বাড়িতে শোকের মাতম চলছে। অপহরণে জড়িত অভিযোগে পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে ওহাব আলী (২৬) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী রাতিমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত রাতিমের পরিবার, পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, গত ২ নভেম্বর বিকেলে বাড়ির পাশে আমবাগানে খেলার সময় অপহরণ হয় রাতিম। পরে রাতিমের পিতা স্থানীয় এনজিওকর্মী মোবারক হোসেনের মোবাইলফোনে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। মুক্তিপণের মধ্যে ১০ হাজার টাকা তাদের বিকাশ মোবাইল নাম্বারে দিয়ে ছেলের মুক্তি দাবি করেন। কিন্তু অপহরণকারীরা রাতিমের পিতার দেয়া ১০ হাজার টাকা বিকাশ থেকে উত্তোলন করে বাকি মুক্তিপণ পরিশোধের জন্য চাপ দেয়। মৌচাক ফাঁড়ির পুলিশকে ঘটনাটি জানান রাতিমের পিতা। পুলিশ কয়েক স্থানে অভিযান চালিয়ে রাতিমকে উদ্ধার করতে পারেনি। পুলিশের অভিযানের খবর পেয়ে অপহরণকারীরা রাতিমকে খুন করে পুকুরে লাশ ফেলে দেয়। পুলিশ বিকাশের মোবাইল নম্বর ট্র্যাক করে অপহরণকারী আব্দুল ওহাব আলীকে গ্রেফতার ও তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক রাতিমের লাশ উদ্ধার করে।

৪-৫ বছর ধরে মোবারক হোসেন চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার তেরুয়া গ্রাম থেকে মৌচাক এলাকায় এসে আব্দুর রাজ্জাক মিয়ার বাড়ির একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে স্ত্রী এবং রাতিম ও মালিসা নামে দু ছেলে-মেয়েকে নিয়ে বাস করেন। লাশ উদ্ধার করার পর মা মরিয়ম জাহার চৌধুরী বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন। রাতিমের পিতা মোবারক হোসেন জানান, অপহরণকারীদের সাথে প্রথমে সমঝোতা করেই রাতিমকে উদ্ধারের চেষ্টা করি। পরে অপহরণকারীরা দাবিকৃত ৫ লাখ টাকা দ্রুত দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করলে ঘটনাটি পুলিশকে জানাই। মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আজহারুল ইসলাম জানান, ঘটনার সাথে প্রভাবশালীদের সন্তানেরা জড়িত রয়েছে।