মামলা হলেও কাউকে ধরতে পারেনি পুলিশ

ফলোআপ: সন্তোষপুর-আন্দুলবাড়িয়া সড়কে দীর্ঘসময় ধরে গণডাকাতি

 

আন্দুলবাড়িয়া প্রতিনিধি: জীবননগরের সন্তোষপুর-আন্দুলবাড়িয়া সড়কে আলোচিত সড়কে গণডাকাতির সাথে জড়িত তেমন কাউকে ধরতে পারেনি পুলিশ। তবে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে পুলিশের তরফে জানিয়ে বরা হয়েছে, ছিনতাইকারীদের ধরতে জোর তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। সন্দেহভাজন কয়েকজনকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

গতপরশু রাত আনুমানিক ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা জীবননগরের সন্তোষপুর-আন্দুলবাড়িয়া সড়কে গাছ ফেলে গণহারে ডাকাতি করে। এ ঘটনায় দেহাটি কনটেক মিলের সিকিউরিটি অফিসার নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। এজাহরে কারো নাম উল্লেখ না করে বলা হয়েছে, অজ্ঞাত পরিচয়ের অস্ত্রধারীরা গত সোমবার রাতে একতারপুর রাস্তার অদূরে একদল অস্ত্রধারী গাছ ফেলে গণহারে ডাকাতি শুরু করে। ১৫/১৬ জনের ছিনতাইকারী দল দেশীয় ধারালো অস্ত্র ও বোমা মেরে হত্যার হুমকি দিয়ে পথচারী ও যাত্রী সাধারণের জিম্মি করে নগদ টাকা, মোটর সাইকেল, মোবাইলফোন, সোনার গয়নাগাটি ও যাবতীয় মালামাল ছিনিয়ে নিয়ে নির্বিঘ্নে স্থান ত্যাগ করে। ছিনতাইকারী দলের হাতে জিম্মি কয়েকজন যাত্রী টাকা-পয়সা ও মালামাল দিতে বিলম্ব করার কারণে ডাকাতদলের সদস্যরা তাদের মারধর করে উপস্থিত সকলকে আতঙ্কিত করে তোলে। এদের কবল থেকে বাড়ি ফেরার পথে এবার নারী যাত্রীরা রক্ষা পায়নি।

স্থানীয়রা বলেছে, জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কে দীর্ঘ দু ঘণ্টা ধরে একে একে যাত্রীদের আটক করে ছিনতাই সংঘটিত করলে ও সাহাপুর টইল পুলিশের দেখা মেলেনি। এ সময় পুলিশ টইলদল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে পুলিশের সহযোগিতায় ছিনতাইকারী দলের কয়েকজন সদস্যকে আটক করা সম্ভব হতো। তবে দায়িত্ব র্কতব্য অবহেলার দায়ে সাহাপুর পুলিশের ইনচার্জের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এ তথ্য জানিয়ে ছিনতাইয়ের শিকার কয়েকজন ব্যক্তি মাথাভাঙ্গা এ প্রতিনিধিকে জানান, জীবননগরের আন্দুলবাড়িয়ার কুলতলা গ্রামের আব্দুল আজিজ বিশ্বাসের স্ত্রী কোবেরা খাতুন (৭৫) গত সোমবার বিকালে ইন্তেকাল করেন। এ খবর পেয়ে মৃত ব্যক্তির নিকট আত্মীয় আকন্দবাড়িয়া গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা ও দেহাটি কনটেক মিলের সিকিউরিটি অফিসার নুরুল ইসলাম ও তার স্ত্রীসহ স্বজনদের সাথে নিয়ে মোটরসাইকেল ও আলমসাধুযোগে কুলতলা গ্রামে যান। তারা জানাজা শেষে শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদন জানিয়ে রাত ৯টার দিকে ওই সড়কপথ দিয়ে পাউয়ারট্রিলার, আলমসাধু ও মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফিরছিলো। পথিমধ্যে একতারপুর রাস্তার অদূরে আলোচিত ছিনতাই স্পটে পৌছুলে সশস্ত্র ছিনতাইকারী দলের সদস্যরা রাস্তায় গাছ ফেলে গতিরোধ করে যাত্রী সাধারণের ভয়ভীতি ও আতঙ্কিত করে মোটরসাইকেল, নগদ টাকা, মোবাইলফোন ও সাথে থাকা নারীদের নিকট সোনার গয়নাগাটি ছিনিয়ে নেয়। তারা একে একে সন্তোষপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে মিশুক চালক ফারুক হোসেন ও মিশুক যাত্রী আন্দুলবাড়িয়া বাজারের ইলেকট্রনিক্স টেকনিশিয়ান জিল্লুর রহমান, বাজদিয়া গ্রামের কপি ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলামকে জিম্মি করে নগদ টাকা, মোবাইলফোন ও মালামালসহ প্রায় ৪ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে আটকিয়ে রাখে। প্রতক্ষ্যদর্শীরা বলেছে, ছিনতাইকারীরা এ সময় দুটি ট্রাক, দুটি পিকআপসহ বেশ কয়েকটি যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের আটক করে সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয়।

এ ব্যাপারে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ূন কবীরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। রাতেই কয়েকজনকে গ্রেফতার করার অভিয়ান চালানো হবে। প্রসঙ্গত, সন্তোষপুর-আন্দুলবাড়িয়া সড়কে চিহ্নিত ছিনতাই স্পটে একাধিকবার আলোচিত ছিনতাই সংঘটিত হলেও পুলিশ এ পর্যন্ত কোনো ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করতে পারেনি।