মাথাভাঙ্গা নদীর বুক থেকে কোমর ও জংলা অপসারণ থমকে গেছে

জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা পালনে মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের গাফিলতি

 

ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কোমর ও জংলা মালিকদের শাস্তি দাবি

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস মাথাভাঙ্গা নদী থেকে কোমর ও জংলা অপসারণের আন্তরিকতার সাথে উদ্যোগ নিলেও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণে নদী থেকে কোমর অপসারণ সফল না হওয়ায় জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কিন্ত, জেলা প্রশাসকের নির্দেশনার সফল বাস্তবায়ন দেখতে চাই জেলাবাসী।

পরিবেশবাদীদের দাবি, বর্তমানে মাথাভাঙ্গা নদীতে থাকা অবৈধ কোমর অপসারণে ভ্রাম্যমাণ আদালতের আওতায় এনে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেছে এলাকাবাসী। এছাড়া মাথাভাঙ্গা নদীর ওপর বাঁশের তৈরি ১১টি সাঁকো অপসারণের দাবি তুলেছে মানবাধিকার কর্মীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিগত দেড়মাস আগে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মৎস্য বিভাগের সহযোগিতায় মাথাভাঙ্গা নদী থেকে অবৈধ কোমর অপসারণের নির্দেশ দেন। এরপর একটি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর, আলমডাঙ্গা ও দামুড়হুদা উপজেলা প্রশাসন কোমর অপসারণে এলাকায় মাইকিং করে প্রচার করে। নির্ধারিত দিনের পর ৩ উপজেলায় মাথাভাঙ্গা নদী থেকে অতিদরিদ্র প্রকল্পের শ্রমিকদের দিয়ে কোমর অপসারণ করা হয়। কিন্ত অভিযান শুরু করতে দেরি হওয়ায় সকল স্থানে কোমর অপসারণ করা সম্ভব হয়নি। ফলে আলমডাঙ্গার বটিয়াপাড়া, সদর উপজেলার হাজরাহাটি ও দামুড়হুদা উপজেলার কেশবপুরসহ বেশকিছু এলাকায় এখনো কোমর রয়ে গেছে। জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা মোতাবেক কাজ না হওয়ায় মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের গাফিলতিকে দুষছেন এলাকাবাসী।

গতকাল শনিবার দুপুরে দামুড়হুদা উপজেলার কেশবপুর গ্রামে মাথাভাঙ্গা নদীতে সারিসারি বেশ কয়েকটি কোমর দেখা গেছে। এরমধ্যে সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার বিল্লাল হোসেন ও মুন্তাজ আলীসহ বেশ কয়েকজনের নাম উঠে এসেছে। এসব অবৈধ কোমর অপসারণসহ মাথাভাঙ্গা নদীর ওপর স্থাপিত অবৈধ ১১টি বাঁশের সেতু অবিলম্বে অপসারণের দাবি করেছে মানবাধিকার কর্মীরা।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ফিরোজ আহমেদ বলেন, স্বল্প সময়ের কারণে সব জায়গায় কোমর অপসারণ সঠিকভাবে হয়নি। তবে কিভাবে এগুলো অপসারণ করা যায় সেবিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

দামুড়হুদা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আয়ূব আলী বলেন, দামুড়হুদা উপজেলায় শতকরা ৭০ ভাগ এলাকায় অপসারণের কাজ সম্ভব হয়েছে। কেশবপুর ও বাস্তপুরে বাকি রয়েছে। কিভাবে করা যায় তা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে আলাপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রসঙ্গত, এরআগে ২০১০ সালের এপ্রিল মাসে তৎকালীন জেলা প্রশাসক ভোলানাথ দে প্রথম পর্যায়ে, তারপর জেলা প্রশাসক দেলোয়ার হোসেন দ্বিতীয় পর্যায়ে এবং সর্বশেষ বর্তমান জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস’র বিশেষ উদ্যোগে মাথাভাঙ্গা নদী থেকে কোমরসহ নদীতে বাঁধাপ্রাপ্ত হয় এমন কিছু অপসারণের নির্দেশনা দেয়া হয়।