মহেশপুর উপজেলা নির্বাচনে আ.লীগের প্রার্থীর পরাজয়ের কারণ দলের ত্রিমুখি কোন্দল

মহেশপুর প্রতিনিধি: চতুর্থ উপজেলা নির্বাচনে মহেশপুর আ.লীগের প্রার্থীর পরাজয়ের কারণ হিসেবে নানা গুঞ্জন শোনা গেলেও মূল কারণ হিসেবে দলের ত্রিমুখি আভ্যন্তরীণ কোন্দল।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি মহেশপুর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ নির্বাচন আ.লীগের প্রার্থী হিসেবে ছিলো দলের উপজেলা সাধারণ সম্পাদক বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ময়জদ্দীন হামীদ, বিএনপির শাহজামান মোহন এবং জামায়াতের উপজেলা আমির আব্দুল হাই। নির্বাচনে ১৯ হাজার ভোটের ব্যবধানে জামায়াতের প্রার্থী আব্দুল হাই বিজয় হয়। আ.লীগের প্রার্থী ময়জদ্দীন হামীদ পরাজয়বরণ করে। দলের নেতাকর্মীরা নানা ধরনের অভিযোগ দিচ্ছে। সবাই বিভিন্ন স্থানে বলছেন, দলে বর্তমান ত্রিধারায় আভ্যন্তরীণ কোন্দল চলমান। দলের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি শেখ নিজাম উদ্দিন ও বীরমুক্তিযোদ্ধা কাজী আব্দুস সাত্তার বলেন, দলের সভাপতি সাজ্জাতুজ জুম্মা, বর্তমান এমপি মো. নবী নেওয়াজ, সাবেক এমপি শফিকুল আযম খাঁন চঞ্চল এ তিন ধারায় বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। নির্বাচনের মাঠে শেষ দিকে সাবেক এমপি চঞ্চল মাঠে নামলেও বাকি দুজন দলের প্রার্থীর পক্ষে তেমন কোনো ভূমিকা রাখেনি। দলের উপজেলা সভাপতি ভোটের দু দিন আগে এসে অসুস্থতার কথা বলে পরের দিন ঢাকায় চলে যায়। কিন্তু কয়েকজন নেতা বলেন, সভাপতি সাহেব এলেও প্রার্থী তাকে ভোটের মাঠে ডাকেননি এমন অভিযোগ রয়েছে। এমপি নবী নেওয়াজ ইউনিয়ন সভাপতি-সেক্রেটারিদের সাথে বৈঠক করলেও কোনো দিক নির্দেশনা দেননি। তৃণমূল নেতাকর্মীরা মনে করেন আ.লীগের প্রার্থীসহ ৩ নেতা একই সাথে মাঠে নামলে ভালো ফলাফল পাওয়া যেত। এছাড়া অনেকেই বলেছেন, প্রার্থী নিজে অসুস্থ হওয়ার কারণেও মাঠে ভালো কাজ করতে পারেননি। দলের সিনিয়র নেতা আবুল কাশেম মাস্টার বলেন, এ নির্বাচনে দলের কোনো শৃঙ্খলা ছিলো না এবং যথেষ্ট পরিকল্পনার অভাব ছিলো।

এদিকে প্রার্থী নিজে শুক্রবার বিকেলে সাংবাদিক সম্মেলন করে অভিযোগ করে বলেছেন, মহেশপুর মাঠ পর্যায়ে প্রশাসন (যৌথবাহিনী) সরাসরি জামায়াতের পক্ষে কাজ করেছে। তাদের নেতাদের ওপর অহেতুক নির্যাতন করেছে এবং কেন্দ্রে গতি সৃষ্টি করে আ.লীগের কর্মীদের থাকতে দেয়া হয়নি। পৌর আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক বুলু বলেন, উপজেলা নির্বাচনে সাংগঠনিকভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়নি। এমপিকে কোনো কাজে লাগানো হয়নি। তাছাড়া দলীয় প্রার্থীর অনেক দোষ ত্রুটি ছিলো যে কারণে তাদের ফল বিপর্যয় হয়েছে। সম্মিলিতভাবে কাজ করলে ভালো ফল পাওয়া যেত। বিজয় অর্জন করার জন্য জামায়াত নানামুখি কৌশল অবলম্বন করেছে। বিএনপির একাংশ সরাসরি জামায়াতের পক্ষে ভোট করেছে। এনিয়ে বিএনপির মধ্যে নানা জল্পনা কল্পনা চলছে। আ.লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে হতাশা। এনিয়ে মহেশপুর উপজেলা নির্বাচনে যারা উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তারা হলেন, প্রথমবার বজলুর রহমান (জাপা), দ্বিতীয়বার আব্দুল মালেক মাস্টার (জামায়াত), তৃতীয়বার ময়জদ্দীন হামীদ (আ.লীগ) এবং চতুর্থবার আব্দুল হাই (জামায়াত) নির্বাচিত হন।