মহেশপুরে সেই ৬৫ পিস সোনার বার ডাকাতি না আত্মসাৎ

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের মহেশপুর থানা পুলিশের মধ্যে এখন ক্লোজড আতঙ্ক বিরাজ করছে। কথিত সোনার বার ডাকাতির ঘটনা নিয়ে ১৬ দিনের ব্যবধানে মহেশপুর থানার ওসি আহম্মদ কবির হোসেন এবং দুই এসআইসহ ৯ পুলিশ প্রত্যাহার হওয়ার ঘটনায় এ আতঙ্ক। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে যদিও প্রশাসনিক কারণে ৯ পুলিশকে প্রত্যাহারের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু এর নেপথ্যে কি শুধু বাস ডাকাতি না কি ডাকাতি হওয়া সোনার বার আত্মসাতের মতো গুরুতর অপরাধ নিহিত রয়েছে? কারণ এ বাস ডাকাতি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আনিসুর রহমানকেও ক্লোজ করা হয়েছে। আবার গত শুক্রবার ভোরে কোটচাঁদপুর শহরে অভিযান চালিয়ে ডাকাতি হওয়া আনুমানিক ৬৫ পিস সোনার বারের মধ্যে ৩০টি উদ্ধার হওয়ার পরও অভিযানিক দলের সদস্য মহেশপুর থানার ওসি আহম্মদ কবির হোসেনকে রেঞ্জ ডিআইজির নির্দেশে প্রত্যাহার করা হয়। অভিযানের পর ওসি ও ডাকাতি মামলার পর ওই মামলার বাদীকে প্রত্যাহার করার বিষয় নিয়ে হাজারও প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। এমন প্রশ্ন উঠছে তবে কি সোনার বার ডাকাতি ও আত্মসাতের বিষয়টি মহেশপুর থানা পুলিশ অবগত? পুলিশ প্রশাসনে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় হলেও কেও আসল ঘটনা নিয়ে মুখ খুলছে না। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ মোটিভ ও ক্লু উদ্ধার করতে মিডিয়াকে এড়িয়ে চলছে বলেই মনে হচ্ছে। ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ ঘটনার পর থেকেই সাংবাদিকদের বলে আসছেন প্রশাসনিক কারণে মহেশপুর থানার পুলিশ সদস্যদের ক্লোজ করা হচ্ছে।
জানা গেছে, গত ৪ জানুয়ারি রাতে মহেশপুর উপজেলার কালীগঞ্জ-জীবননগর সড়কের সুন্দরপুর এলাকার পুরন্দপুর নামকস্থানে সোনারতরী পরিবহন থেকে একদল ডাকাত পাচার হওয়া ৬ কেজি ওজনের ৬৫ পিস সোনার বার ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় মহেশপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনিসুর রহমান বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর দিন ক্লোজ হন আনিসুর রহমান। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত ওসি আহম্মদ কবির হোসেন, এসআই নাজমুল হক, এসআই আনিসুর রহমান, কনস্টেবল আব্দুল গাফফার, আসাদুল হক, ইমরান হোসেন, মনিরুজ্জামান, এইচএম এরশাদ ও ওলিয়ার রহমানকে ক্লোজ করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে মহেশপুর থানার ওসি আহম্মদ কবির হোসেন কোটচাঁদপুর থানায় কর্মরত অবস্থায় আলোচনায় আসেন। কোটচাঁদপুর থানায় দায়িত্ব পালনকালে তিনি আটক বাণিজ্য করেন বলে বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠতে থাকে। তিনি মহেশপুর থানায় যোগদান করে শাদা পোশাকে তার অনুগত এসআইদের কাজে লাগাতে থাকেন। মহেশপুরের নাটিমা এলাকার সূর্য্যদিয়া গ্রামের মহেশপুর থানার দুই এএসআই সফিকুজ্জামান ও সাইফুল ইসলাম শাদা পোশাকে আটক করতে গিয়ে বিপাকে পড়েন। গ্রামবাসী তাদের ঘিরে ধরলে তারা ফাঁকাগুলি চালিয়ে প্রাণে রক্ষা পান। এ ঘটনায় সাময়িকভাবে বরখাস্ত হন সফিক ও সাইফুল। তবে পুলিশের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো সে সময় কর্তব্যে অবহেলার কারণে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানান।