মহেশপুরে ভূমিহীনরা দেন জমির খাজনা আর চাষ করে খান ইউপি মেম্বার

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের মহেশপুরে ৪০ শতক খাস জমির খাজনা দেন ভূমিহীনরা, আর জোর পূর্বক জমি দখলে নিয়ে চাষ করে খাচ্ছেন আব্দুল্লাহ স্বপন নামে কাজিরবেড় ইউনিয়নের মেম্বার।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, মহেশপুর উপজেলার সামন্তা গ্রামের ভূমিহীন মসলেম উদ্দিন ও সৈয়দ আলী ২০১১ সালে ৪০ শতক খাস জমি ৯৯ বছরের জন্য বন্দোবস্ত পান। কিন্তু এই জমি তাদের দখল নিতে দিচ্ছেন না মেম্বার আব্দুল্লাহ স্বপন। জমি দখল করতে গেলেই মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার ভয় দেখানো হয়েছে। অথচ প্রতি বছর তারা জমির খাজনা ও কর দিচ্ছেন। সরকারকে এককালীন টাকাও পরিশোধ করেছেন।

ভূমিহীন সৈয়দ আলী জানান, তিনি মহেশপুরের সামন্তা বাজারে চায়ের দোকান দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। সরকার ভূমিহীনদের মাঝে খাস জমি বন্দোবস্ত দিচ্ছেন এমন খবর পেয়ে তিনি ও একই গ্রামের মসলেম উদ্দীন ২০১১ সালে জমি বন্দোবস্ত চেয়ে আবেদন করেন। সরকারের পক্ষ থেকে তিনি সামন্তা গোপালপুর মৌজায় ০১ নম্বর খতিয়ানের সাবেক ৪৩৬-৪৩৭ দাগের ১৫ শতক জমি ৯৯ বছরের জন্য বন্দোবস্ত পান। আর মসলেম উদ্দিন একই নিয়মে পান ২৫ শতক জমি।

সৈয়দ আলী আরও জানান, এই জমি বন্দোবস্ত পেয়ে তারা দুজনই দখলে নিয়ে ধান চাষ করতে যান। কিন্তু কাজিরবেড় ইউনিয়নের বর্তমান মেম্বার ছাত্রলীগের মহেশপুর পৌর শাখার সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ স্বপন তাদের জমির ওপর যেতে দিচ্ছেন না। স্বপন নিজেই ভূমিহীনদের দেয়া জমি জোর করে দখলে রেখে ধান চাষ করে খাচ্ছেন।

ভূমিহীন মসলেম উদ্দীন জানান, প্রতিবছর বন্দোবস্তের টাকা সরকারের ঘরে জমা দিচ্ছি। কিন্তু জমির ওপর যেতে পারছি না। জমির কর দিচ্ছেন ভূমিহীনরা আর চাষ করে খাচ্ছেন প্রভাবশালী মেম্বার স্বপন। জীবনের ভয়ে ভূমিহীন মসলেম ও সৈয়দ আলী প্রতিবাদ করারও সাহস পাচ্ছেন না। এদিকে জমির দখল পেতে দুই ভুমিহীন সদস্য সরকারের বিভিন্ন দফতরে লিখিত আবেদন করেছেন বলে জানান।

এ ব্যাপারে মহেশপুর পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কাজিরবেড় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আব্দুল্লাহ স্বপন জানান, যারা ওই জমি বন্দোবস্ত নিয়েছেন তারা আসলে ভূমিহীন না। যে কারণে তিনি ওই ব্যক্তিদের জমির দখল দেননি। জমিটি বর্তমানে তারই দখল আছে বলেও তিনি স্বীকার করেন। জমি চাষ করে খাইলেও সরকারকে কোনো কর বা খাজনা দেন না বালেও স্বপন স্বীকার করেন। এ বিষয়ে মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম জানান, তিনি সদ্য যোগদান করেছেন। তার কাছে লিখিত আবেদন করলে তিনি খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান।