ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল পাস

 

স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো এবং চারটি রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অভিন্ন বেতন কাঠামো পাস করেছে সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী এ বেতন কাঠমোতে স্বাক্ষর করেন। আগামী রোববার অথবা সোমবার এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রনালয় থেকে শো-কোজ করা হবে। অর্থ মন্ত্রনালয় সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো ও চারটি রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অভিন্ন বেতন কাঠামোর প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে পাঠানো হয়। সেখান থেকে সংশোধনের জন্য পুনরায় অর্থমন্ত্রনালয়ে দেয়া হয়। পরে সেটা সংশোধন করে আবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠালে বৃহস্পতিবার তাতে স্বাক্ষর করেন প্রধানমন্ত্রী।

পাশকৃত বেতন কাঠামোতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালকদের বেতন হবে মোট ৯৩ হাজার ৭৫০ টাকা। আর পিয়নদের বেতন হবে ১২ হাজার পাঁচশো টাকা।  অনুরূপভাবে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের বেতন হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালকের বেতনের সমান। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সর্বনিম্ন বেতন ও হবে ১২ হাজার ৫০০ টাকা।

এ বেতন কাঠামোর পাশ হলেও খুশি নন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। কারণ রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর একজন উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপকের (জিএম) সমান বেতন-ভাতা পাবেন। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের জিএম পাবেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালকের সমান বেতন-ভাতা। আরো কয়েকটি পদের ক্ষেত্রেও এমনটিই হবে। আর এটা হলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মর্যাদা ক্ষুন্ন হবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ম. মাহফুজ রহমান বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক আর কেন্দ্রীয় ব্যাংক তো এক নয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটি রেগুলেটরি বডি। এ পরিপ্রেক্ষিতে কিছুটা হলেও বেতন বেশি হওয়া উচিত। বেতন বেশি না হলে দক্ষ জনবল নিয়োগে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সমস্যার সম্মুখিন হতে পারে। মেধাবীরা এখানে চাকরির আগ্রহ হারাবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

অর্থ মন্ত্রণালয়সূত্রে জানা গেছে, এ বেতন কাঠামোতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও অর্থনৈতিক উপদেষ্টা এবং রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপকের বেতন-ভাতা সমান রাখা হয়েছে। অথচ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালকের পদ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক পদের এক ধাপ ওপরে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন মহাব্যবস্থাপক রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের উপমহাব্যবস্থাপকের বেতন-ভাতার সমান বেতন-ভাতা পাবেন। এভাবে পরবর্তী ধাপের পদগুলোতেও বেতনের বৈষম্য রয়েছে। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা পদমর্যাদায় ওপরে হলেও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের একই পদের কর্মকর্তাদের তুলনায় কম বেতন পাবেন।

তবে এ বেতন কাঠামোতে খুশি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। রূপালী ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘১৯ বছর ধরে অপেক্ষা করছি এ বেতন কাঠামো পাশের জন্য। পত্রিকার মাধ্যমে শুনে ভালোই লাগছে। আমরা এখন বেতন বেশি পাবো।’