বিয়ের দেড় মাসের মাথায় গলায় উড়না জড়িয়ে হত্যার অপচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে দুর্লভপুরের সাগরের বিরুদ্ধে

 

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: অপেক্ষাকৃত গরিব পরিবারের মেয়েকে দেখে শুনে পছন্দ করে বিয়ের দেড় মাসের মাথায় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যার অপচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে দুর্লভপুরের হালিম ওরফে সাগরের বিরুদ্ধে। গতপরশু ২৮ মে দিনগত রাতে শ্বশুর বাড়ি গিয়ে ঘুমন্ত নববিবাহিত স্ত্রীর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার অপচেষ্টা করে। সে সময় স্ত্রীর চিৎকারে বাড়ির লোকজন দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে গৃহবধূকে রক্ষা করে। স্বামী হালিম ওরফে সাগরকে আটকাতে গিয়ে টানাটানির এক পর্যায়ে গেঞ্জি-লুঙ্গি খুলে গেলে সে দিগম্বর হয়েই দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় গৃহবধূকে উদ্ধার করে রাতেই আলমডাঙ্গার একটি ক্লিনিকে ও পরে হারদী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার দুর্লভপুর গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে আব্দুল হালিম ওরফে সাগর ঢাকায় তার প্রবাসী দুলাভাইয়ের ব্যবসা দেখাশোনা করে। প্রায় দেড় মাস আগে আলমডাঙ্গা পৌরসভাধীন এরশাদপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের ১০ম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে বন্যাকে বিয়ে করে। অবস্থাসম্পন্ন পরিবারের ছেলে হালিম ওরফে সাগর পরিবারের সকলে মিলে গরিব পরিবারের মেয়েকে দেখে শুনে পছন্দ করে বিয়ে দেয়। বিয়ের পর পর নববধূকে সে বাড়িতে নিয়ে যায়। এরই মধ্যে ঢাকায় বসবাসকারী হালিমের বড় বোন বেদানা খাতুনের রোষানলে পড়ে নববধূ বন্যা। বেদানা খাতুন আবার নতুন করে সাগরের বিয়ে ঠিক করে ঢাকাতে। এ নিয়ে বন্যার সাথে খারাপ আচরণ শুরু করে বোনের কথায় উঠাবসা করা সাগর। সম্প্রতি হালিম নববিবাহিতা স্ত্রীকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করার অপচেষ্টা করে। এ ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ে গৃহবধূ। সে শ্বশুরালয় থেকে পিতার বাড়ি চলে আসে। এ ঘটনার পর গত ২৮ মে হালিম ওরফে সাগর শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে যায়। এদিকে, জামাই আসতে দেখে বন্যার মা-বাবার মনে অজানা আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। জামাই- মেয়েকে রাতে ঘরের ভেতরে রেখে তারা বাইরে নির্ঘুম ছিলেন। রাত প্রায় ১২টার দিকে বন্যার আত্মচিৎকারে ছুটে যান তারা। হালকাভাবে ভেতর থেকে বন্ধ করে রাখা দরজা জোরে ধাক্কা দিলে খুলে যায়। ভেতরে ঢুকে দেখতে পান অজ্ঞান অবস্থায় শুয়ে থাকা বন্যার পেটের ওপর উঠে হালিম গলায় উড়না পেঁচিয়ে দু হাত দিয়ে টানছে। পাষুণ্ড হালিম তাদের দেখে দৌঁড়ে পালাতে গেলে বাড়ির অন্যান্যরা তাকে ধরে ফেলেন। সে সময় হালিমের গেঞ্জি-লুঙ্গি ধরে টানাটানির এক পর্যায়ে  সে গেঞ্জি-লুঙ্গি খুলে ফেলে দিগম্বর হয়ে দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। অজ্ঞান অবস্থায় বন্যাকে উদ্ধার করে দ্রুত শহরের একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে হারদী হাসপাতালে রেফার করা হলে গতকাল রোববার সকালে হারদী হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।

গ্রামসূত্রে জানা গেছে, হালিম জঘন্য টাইপের। প্রায় ২ বছর আগে সে প্রথম বিয়ে করে। ৩ তিনবার বিয়ে হওয়া তার বদমেজাজি বোন বেদানার কথামতো সে ওই স্ত্রীকে তালাক দিয়েছে। এরপর আলমডাঙ্গা গোবিন্দপুরে বিয়ে করতে গেলে বিয়ের আসরে বেদানা খাতুন ঝগড়া বাঁধিয়ে বিয়ে ভেঙে দিয়ে চলে যাওয়ার সময় বরসহ বরযাত্রিদের কন্যাপক্ষ আটকে রেখেছিলো। পরে সালিসে বিষয়টির মীমাংসা করা হয়।