বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে এক হাজার রোহিঙ্গা

রাখাইনে রাজ্যে সার্জিক্যাল অপারেশন সেনাবাহিনীর

মাথাভাঙ্গা মনিটর: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে কথিত রোহিঙ্গা মুসলিম বিদ্রোহী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমনে সার্জিক্যাল অপারেশন শুরু করেছে সেনাবাহিনী। গতকাল বৃহস্পতিবার ৩৩তম লাইট ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশনকে মোতায়েন করা হয়েছে। খারাপ আবহাওয়ার মধ্যেই হেলিকপ্টারে করে সেনাদেরকে রাখাইনের রাজধানী সিত্তুইতে নামানো হয়। এরপর তাদেরকে মোতায়েন করা হয় মংডুতে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানানো হয়েছে, মংডুতে নামার পর থেকেই তারা ওই এলাকায় অভিযান শুরু করেছে। মিয়ানমারের অনলাইন সংবাদমাধ্যম মিজ্জিমা ডটকমের এক খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এদিকে অভিযানের কারণে আবারো বাস্তুচ্যুত হচ্ছে রোহিঙ্গারা। অনেক রোহিঙ্গা জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিচ্ছে। রাখাইন রাজ্যে অভিযান চালানোর জন্য নতুন করে মোতায়েনকৃত সেনার সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। দেশটির সেনাবাহিনী মৌখিকভাবে উত্তর রাখাইনের গ্রামবাসীদেরকে ম্যায়ু পার্বত্য এলাকায় যেতে নিষেধ করেছে। কারণ তারা ওই অঞ্চলে শুদ্ধি অভিযান চালাতে যাচ্ছে। সামরিক বাহিনীর দাবি ওই এলাকায় সন্ত্রাসীরা লুকিয়ে সামরিক প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। কয়েক মাস ধরে সরকারি নিরাপত্তাবাহিনী ওই এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে।

সামরিক সূত্র জানিয়েছে, তারা সন্দেহভাজন মুসলিম জঙ্গিদের খুঁজছে। চলমান অভিযানে নতুন করে ৫০০’র বেশি সেনা যোগ দিয়েছে। এশিয়ার কয়েকটি গোয়েন্দা সূত্র তথ্য অনুযায়ী ম্যায়ু এলাকায় বিদেশি অর্থায়নে তিনশো’র বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম সামরিক প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। কয়েকটি পুলিশ চৌকিতে হামলার প্রেক্ষাপটে গত বছরের অক্টোবরে রাখাইনে সামরিক অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী। ওই অভিযানে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে। পরিকল্পিত ধর্ষণ, খুন ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ তদন্তের জন্য আন্তর্জাতিক চাপের মুখে রয়েছে মিয়ানমার। এমন সময় এই সামরিক অভিযান শুরু হয়েছে। এছাড়া আগের অভিযান চলাকালে নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয় প্রায় ৭৫ হাজার রোহিঙ্গা।

এদিকে বার্তা সংস্থা বলেছে, নতুন করে অভিযানের মুখে গত দুই সপ্তাহে এক হাজারের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। এমন অবস্থায় মিয়ানমার সীমান্তে টহল জোরদার করেছে বাংলাদেশ। রাখাইনে নতুন করে সেনা মোতায়েনের আগ পর্যন্ত বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের সংখ্যা কম ছিলো। কিন্তু নতুন করে সেনা মোতায়েন করার কারণে এই হার বাড়তে শুরু করেছে। গত বছর বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রহিম নামে এক রোহিঙ্গা বলেন, এখনো গ্রামের মানুষের সাথে তার যোগাযোগ আছে। সেনারা প্রতিদিনই গ্রামে এসে টহল দিচ্ছে। যে কারণে অনেকেই পালিয়ে আসছে। নতুন করে এক হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে বলে তিনি জানান।