বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে চুয়াডাঙ্গার মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান অবর্ণনীয়

????????????????????????????????????

স্টাফ রিপোর্টার: যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়েছে চুয়াডাঙ্গা মুক্ত দিবস। দিবসটি উপলক্ষে গতকাল সোমবার সকাল ১০টার দিকে শহীদ হাসান চত্বর স্মৃতিসৌধে জাতীয় সঙ্গীতের মধ্যদিয়ে জাতীয় ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পতাকা উত্তোলন করে পুষ্পমাল্য দিয়ে স্থানীয় শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা প্রশাসনের পক্ষে জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস, জাতীয় সংসদের হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপির পক্ষে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার মোস্তফা খান ও শহীদ হাসান এবং বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিট কমান্ডের পক্ষে জেলা কমান্ডার আবু হোসেন। সেখানে শহিদের আত্মার শান্তির উদ্দেশে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চুয়াডাঙ্গা জেলা ও সদর উপজেলা কমান্ডের আয়োজনে বর্ণাঢ্য র্যা লি বের করা হয়। র্যা লিটি শহীদ হাসান চত্বর প্রদক্ষিণ করে টাউন ফুটবল মাঠে শেষ হয়। র্যা লিতে চুয়াডাঙ্গা জেলার অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। র্যা লি শেষে ফিতা কেটে ও কবুতর অবমুক্ত করে বিজয় মেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিট কমান্ডের কমান্ডার আবু হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা পরিষদ প্রশাসক মাহফুজুর রহমান মঞ্জু, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আনজুমান আরা, পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার মোস্তফা খান ও শহীদ হাসান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস বলেন, বাঙালি জাতির হাজার বছরের ইতিহাস অধিকার আদায়ের সংগ্রাম মুখর। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জনপদ চুয়াডাঙ্গা জেলার মানুষেরও রয়েছে এই মুক্তির লড়াইয়ে শামিল হবার গৌরবময় ইতিহাস। ব্রিটিশ শাসনের সূচনাকাল হতেই ভারতবর্ষের অন্যান্য জায়গার মতোই তৎকালীন নদীয়া জেলার অন্তর্ভূক্ত চুয়াডাঙ্গার মানুষও অগণিত বিদ্রোহ ও গণতান্ত্রিক সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছে। মূলত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ছিলো ১৯৭১ সালে সংঘটিত তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানের সশস্ত্র সংগ্রাম, যার মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে পৃথিবীর মানচিত্রে আত্মপ্রকাশ করে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে চুয়াডাঙ্গার মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান অবিস্মরণীয়।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদ প্রশাসক মাহফুজুর রহমান মঞ্জু, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আনজুমান আরা, পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার মোস্তফা খান ও শহীদ হাসান। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা কমান্ডার আ.শু বাঙ্গালী।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর পাকবাহিনী মেহেরপুর থেকে ২৮ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে চুয়াডাঙ্গার দিকে আসে। ওইদিন সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গার মাথাভাঙ্গা নদীর ব্রিজটি পাকবাহিনী বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়, যাতে মুক্তিবাহিনী তাদের অনুসরণ করতে না পারে। ৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যার মধ্যে পাকবাহিনী চুয়াডাঙ্গা শহর ও আলমডাঙ্গা ছেড়ে কুষ্টিয়ার দিকে চলে গেলে চুয়াডাঙ্গা সম্পূর্ণ শত্রুমুক্ত হয়।
কার্পাসডাঙ্গা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ৭ ডিসেম্বর চুয়াডাঙ্গা মুক্ত দিবস উপলক্ষে দামুড়হুদার নাটুদাহে আটকবরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেয়া হয়। গতকাল সোমবার সকাল ৮টার দিকে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চুয়াডাঙ্গা জেলা কমান্ডার আবু হোসেনের নেতৃত্বে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানো হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি কমান্ডার মোস্তফা খান, শহিদ হোসেন, সদর উপজেলা ডেপুটি কমান্ডার আহসান আলী, সাবেক অর্থ কমান্ডার মুরাদ আলী ও নাটুদাহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা আজিবর রহমান।