ফিংগার প্রিন্ট নেয়ার নামে ষোড়শীকে তিনদিন আটকে রেখে ধর্ষণ

চুয়াডাঙ্গায় সৌদি আরবে পাঠানোর প্রলোভনে গরু বিক্রি ও ভিটে বন্দকের টাকাও হাতিয়েছে প্রতারক

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় সৌদি আরবে নিয়ে যাওয়ার প্রলোভন দিয়ে এক ষোড়শীকে তিনদিন আটকে রেখে ধর্ষণ করেছেন এক আদম দালাল। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গবরগাড়া গ্রামের প্রভাবশালী আদম দালাল জুলমত আলী এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। এ নিয়ে মামলা করতে চাইলেও গ্রামের প্রভাবশালী কয়েকজন মাতবর তাদেরকে হুমকি ধামকি দিয়ে থামিয়ে রেখেছেন। গতকাল রোববার বিকেলে চুয়াডাঙ্গার মানবতা ফাউন্ডেশনের কাছে অসহায় ধর্ষিতা গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এ অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, মাস খানেক আগে এলাকার ষোড়শীকে সৌদি আরবে নিয়ে যাওয়ার জন্য লোভনীয় বেতনের অফার দেন গোবরগাড়ার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে আদম দালাল জুলমত আলী। এরই মধ্যে ষোড়শীর পরিবারের কাছ থেকে এক লাখ টাকাও কৌশলে হাতিয়ে নেন জুলমত। গত ১ জুলাই ফিংগার প্রিন্টের নামে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ষোড়শীকে বাড়ি থেকে নিয়ে যান জুলমত। কিন্তু ঢাকায় না নিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের একটি বাড়িতে তিনদিন আটকে রেখে তাকে উপর্যুপরি ধর্ষণ করেন তিনি। ৪ জুলাই জুলমত এসে তাকে বাড়িতে রেখে যান। বাড়িতে ফিরে মায়ের সাথে সব ঘটনা বলে দেয় ধর্ষিতা। ধর্ষিতার হতদরিদ্র পিতা জানান, মেয়ের সুখের জন্য একটি গরু বিক্রি এবং ভিটাটুকু বন্ধক রেখে এক লাখ টাকা তুলে দিয়েছি জুলমতের হাতে। কিন্তু জুলমত বিদেশে নিয়ে যাওয়ার বদলে মেয়েকে তিনদিন আটকে রেখে ধর্ষণ করেছে। বিষয়টি গ্রামের মাতবরদেরকে জানানো হলেও জুলমত প্রভাবশালী হওয়ায় সালিশে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। উপরন্তু বিষয়টি থানা পুলিশকে না জানানোর জন্য মাতবর আবুল আওয়াল বেপারি ধর্ষিতার পরিবারকে হুমকি ধামকি দেন। পরে ধর্ষিতার দরিদ্র পিতা চুয়াডাঙ্গার মানবতা ফাউন্ডেশন সংস্থায় অভিযোগ করেন। গতকাল রোববার দুপুরে মানবতার নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট মানি খন্দকার সংস্থার অন্যান্য সদস্যকে নিয়ে ধর্ষিতার বাড়িসহ এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় ধর্ষিতা কেঁদে কেঁদে সব ঘটনা জানায়। আদম দালাল জুলমত মামলা না করার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকিধামকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করে ধর্ষিতা। তবে অ্যাডভোকেট মানি খন্দকার বলেন মামলার প্রস্তুতি চলছে। জুলমত আলী যতো বড় প্রভাবশালীই হোক না কেন তার বিরুদ্ধে আজ সোমবার মামলা দায়ের করা হবে। এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমার নলেজে ছিলো না। তবে ধর্ষিতার পক্ষ থেকে মামলা দিলে অবশ্যই অভিযুক্ত আদম দালাল জুলমতের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’