ফলোআপ: চুয়াডাঙ্গার ফুরশেদপুরে গরুব্যবসায়ী নাসিরের আত্মহত্যা নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি

মিলতে শুরু করেছে হত্যার আলামত
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার হরিশপুর গ্রামের গরুব্যবসায়ী নাসির আত্মহত্যা করেছে নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে তা নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। প্রথমে ছোট বউ বুলু নাসিরের সাথে যোগাযোগের বিষয়টি অস্বীকার করলেও ঘটনার রাতে সে বাড়িতে এসেছিলো বলে প্রতিবেশীদের নিকট মুখ খুলেছে। তবে জমিজমা নিয়ে পূর্বশত্রুতার জের ধরে তৃতীয় কোনো পক্ষ ছোট স্ত্রীকে ব্যবহার করে থাকতে পারে বলেও তা নিয়ে শোনা যাচ্ছে নানা গুঞ্জন। গুঞ্জন গুজবে কান না দিয়ে পুলিশ অবশ্য ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের প্রতীক্ষায়। পুলিশের তরফে বলা হয়েছে, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পরই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নের ফুরশেদপুর গ্রামের আবু বাক্কার ছেলে গরুব্যবসায়ী নাসির উদ্দিনের লাশ গত শনিবার সকালে তাদেরই পুকুরের ধারে পড়ে থাকতে দেখে গ্রামের লোকজন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করে। ওই দিনই রাতে তার দাফন সম্পন্ন হয়। নাসিরের পরিবারের লোকজনের সন্দেহের তীর পড়ে ছোট বউয়ের দিকে। কারণ স্বামীর লাশ পুকুরের ধারে পড়ে থাকলেও সে তা দেখতে যায়নি। প্রথম দিকে নাসিরের সাথে তার কোনো যোগাযোগ নেই বলে ছোট বউ সাফ জানিয়ে দেয়। কিন্তু পরের দিন রোববার প্রতিবেশীদের সাথে গল্পের ছলে প্রকাশ করেছে ঘটনার রাতে নাসির তার কাছে এসেছিলো এবং দৈহিক মিলনও ঘটেছে। যার আলামত নাসিরের পরনে থাকা লুঙ্গিতে তার নমুনা লেগে আছে বলে তার পরিবারের লোকজন জানায়।
এদিকে ময়নাতদন্তের সময় নাসিরের মাথার পেছনে আঘাতের চিহ্ন ছিলো বলেও জানায়। নাসির ৬ বোনের একমাত্র ভাই নাসির। বাড়ির সাথে ৯ বিঘার একটি পুকুর আছে। যে পুকুরটি ছোট বউয়ের এক নিকটাত্মীয় লিজ নিয়ে করে চাষ করতো। এক পর্যায়য়ে জাল কাগজ করে ওই ব্যক্তি নিজের পুকুর বলে দাবি করে বসে। এ নিয়ে মামলা মোকাদ্দমা হয়। মামলায় নাসিরের পিতা আবু বাক্কা নিজের পুকুর ফিরে পান। মূলত শত্রুতা সেখান থেকেই শুরু হয় বলে নাসিরের বৃদ্ধ পিতা জানান। নাসিরের প্রথম স্ত্রী ৫ সন্তানের জননী সাহিমা বেগম বলেন, ঘটনার দিন নাসির মাগরিবের আজানের একটু আগে বাড়ি থেকে বের হয়ে বেগমপুর কোলনিপাড়া বাজারে যায়। যাওয়ার সময় নাসির বলে যায় আমার কিছু জরুরি জিনিস আছে বুলুর কাছে তা আনতে যাব। রাতে বাড়ি ফিরবো না।
এদিকে নাসিরের ৫টি সন্তান পিতার জন্য শোকে কাতর হয়ে শুধু মায়ের কাছে প্রশ্ন করছে- বাবা কবে আসবে? ৪ মেয়ের পর ওই পরিবারে একটি ছেলে সন্তান হওয়ায় পরিবারের সবার মুখে হাসি ফুটে ওঠে। ২ বছরের সাইদুরের মুখে এখন শুধু একটিই ডাক বাবা বাবা। তবে দিন যতো যাচ্ছে ততোই গ্রামজুড়ে বইছে নানা কথা। প্রশ্ন উঠেছে নাসির কী আত্মহত্যা করেছে নাকি তাকে হত্যা করে লাশ পুকুরের ধারে ফেলে গেছে তৃতীয় কোনো পক্ষ। যেখানে নাসিরকে সুবিধা মতো জায়গাই পেতে ব্যবহার করা হয়েছে তার ছোট বউকে। নাসিরের আত্মহত্যা নিয়ে গ্রামে সৃষ্টি হয়েছে ধুম্রজালের। বিষয়টি পুলিশ খতিয়ে দেখলে অনেক প্রশ্নের জবাব মিলতে পারে বলে গ্রামের অনেকেই মন্তব্য করেছেন।