ফলোআপ : চুয়াডাঙ্গার কলাগাছি গ্রামে হুন্ডিব্যবসায়ী হরেন ঘোষের ফাঁদে পড়ে অনেকেই দিশেহারা : টাকার শোকে সিরাজুল অসুস্থ

বেগমপুর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার কলাগাছি গ্রামের হুন্ডিব্যবসায়ী হরেন ঘোষের ফাঁদে পড়ে টাকা খুয়িয়ে অনেকেই দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। টাকা ফেরত পেতে গড়াইটুপি কিংবা খাড়াগোদা বাজারে প্রতিদিনই বসছে সালিস বৈঠক। তবে কে শুনছে নালিশ আর কে করছে সালিস তা স্পষ্ট না। এরই মাঝে টাকার বিপরীতে অনেকেরই নামে জমি রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন বলে শোনা গেছে। সচেতন মহলের প্রশ্ন হরেন ঘোষ একা দায়ী না। মোটা অংকের সুদ পাওয়ার আশায় যারা টাকা লগ্নি করেছে তারাও দোষী। এদিকে দিন দিন পাওনাদারের সংখ্যা বাড়ছে বলে জানা গেছে। প্রশ্ন উঠেছে এরা কি প্রকৃত পাওনাদার না কী সুযোগে সৎ ব্যবহার করছে?

অভিযোগে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কলাগাছি গ্রামের মৃত গণেশ ঘোষের ছেলে ভূষিমাল ব্যবসায়ী হরেন ঘোষ ব্যবসার সুবাদে বিভিন্ন ব্যক্তির সাথে দীর্ঘদিন ধরে লেনদেন করে আসছিলেন। লেনদেনে সচ্ছতা ও সরলতা কাজে লাগিয়ে লাখে প্রতিদিন, সাপ্তাহিক ও মাসিক হারে মোটা অঙ্কের লাভ দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অর্ধশত ব্যক্তির নিকট থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নেন হরেন ঘোষ। বিশ্বাস স্থাপন করানোর জন্য যার সাথে যে ধরনের চুক্তি সেই হারে লাভের টাকাও দিতে থাকেন তিনি। লোভে পড়ে অনেকেই হুমড়ি খেয়ে পড়েন এই সুযোগ ধরার জন্য। তবে এ লেনদেন বেশিদূর এগোতে পারেনি। কয়েকদিন আগে প্রতিবেশী সিদ্দিক মল্লিকের ছেলে সিরাজুল ইসলামের সাড়ে ৬ লাখ টাকা লেনদেন নিয়ে ঘটনা জানাজানি হয়ে পড়ে। তখন টনক নড়ে অনেকেরই। হরেন ঘোষের সাথে যাদের টাকা লেনদেন হয়েছে বলে শোনা গেছে তাদের মধ্যে রয়েছেন ঝিনাইদহ গোবিন্দপুর গ্রামের শওকত আলী ৫ লাখ, রবগুল ৪ লাখ, যশোরের জনৈক মিন্টু ২০ লাখ, বিমল ঘোস ১২ লাখ, ডাক্তার জসিম ২ লাখ ৭০ হাজার, সাধন ৪ লাখ, অধির ঘোষ ১২ লাখ, তেঘরি গ্রামের হোসেন আলী ১৬ লাখসহ অর্ধশত ব্যাক্তির প্রায় দেড়কোটি টাকা। টাকা লগ্নিকারী গড়াইটুপি বাজারের জসিম ডাক্তার বলেন, এখন পর্যন্ত আমার বিকাশের ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা পায়নি।

কলাগাছি গ্রামের সিরাজুল ইসলাম বলেন, হরেনকে আমার সন্তানের মতো বিশ্বাস করতাম। আমার আয় ব্যয়ের সমস্ত টাকা থাকতো তার নিকট। সে এমন একটি ঘটনা ঘটাবে বিশ্বাসই করতে পারছি না। জানি না টাকা ফেরত পাবো কি-না। এদিকে টাকার শোকে সিরাজুল ইসলাম অসুস্থ হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে দু দিন চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছে।

একটি সূত্র বলেছে, কু-কথা কানে নিয়ে হরেন ঘোষকে টাকা ফেরত না দিতে কতিপয় ব্যক্তি বাঁকা পথে হাঁটছেন। অপরদিকে চড়া সুদ পাওয়ার আশায় যারা টাকা লেনদেন করেছেন তাদের নিয়েও বইছে আলোচনা সমালোচনা। এ বিষয়ে কলাগাছি গ্রামের ভূষিমাল ব্যবসায়ী উজ্জ্বল ঘোষ বলেন, হরেনের সাথে অনেক ব্যক্তির টাকা লেনদেন হয়েছে। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকে পাওনাদারদের টাকা পর্যায়ক্রমে শোধ দিচ্ছে বলে জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে হরেনের পরিবারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও মোবাইলফোন রিসিভ করেনি।