পাকিস্তানে জোড়া আত্মঘাতী বোমায় রক্তাক্ত পুলিশ কলেজ

 

মাথাভাঙ্গা মনিটর: পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ বেলুচিস্তানের রাজধানী কোয়েটায় জঙ্গিদের গুলি ও জোড়া আত্মঘাতী বোমায় রক্তাক্ত হলো পুলিশ প্রশিক্ষণ কলেজ। গত সোমবার রাতে নৃশংস এই হামলায় অন্তত ৬০ জন নিহত হয়েছেন যাদের মধ্যে পুলিশ ক্যাডেট ও নিরাপত্তা প্রহরী রয়েছেন। আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক। তিন জঙ্গি মুখোশ ও সুইসাইড ভেস্ট পরিধান করে এবং কালাশনিকভ রাইফেল দিয়ে এই হামলা চালায়। পুলিশ জানিয়েছে, অধিকাংশ নিহত হয়েছেন দুই জঙ্গির আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে। এক জঙ্গি নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছে। বেলুচিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই হামলাকে বছরের অন্যতম ভয়ঙ্কর জঙ্গি হামলা বলে উল্লেখ করেছেন। এদিকে হামলাকারী গ্রুপ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেটসহ (আইএস) আরও একটি জঙ্গি গোষ্ঠী। তবে নিরাপত্তা বাহিনী জঙ্গি গোষ্ঠী লস্কর-ই-জাংভিকে সন্দেহ করছে। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন জানায়, সোমবার স্থানীয় সময় রাত ১১টা ১০ মিনিটে কোয়েটা থেকে ২০ কিলোমিটার পূর্বে দ্য নিউ সরিয়াব পুলিশ ট্রেনিং কলেজে প্রবেশ করে তিন জঙ্গি। তারা কলেজের হোস্টেলে চলে যায় যেখানে ক্যাডেটদের কেউ ঘুমাচ্ছিলেন কিংবা কেউ বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। প্রাদেশিক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মির সরফরাজ আহমেদ বুগতি সাংবাদিকদের বলেন, জঙ্গিরা সুইসাইড ভেস্ট পরেছিলো। জঙ্গিরা প্রথমে ওয়াচ টাউয়ারের প্রহরীদের গুলি করে হত্যা করে। পরে তারা কলেজ কেন্দ্রে প্রবেশ করে এবং হোস্টেলে ঢুকে গুলি শুরু করে। এক আত্মঘাতী হামলাকারীর মৃতদেহ পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে বলে বুগতি জানান।

নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, কলেজটিতে ৭০০ প্রশিক্ষণার্থী ছিলেন। তাদের মধ্যে ১৫ থেকে ২৫ বছর বয়সী অনেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। পালিয়ে আসা এক ক্যাডেট জানান, আমি তিনজনকে কালাশনিকভ রাইফেল নিয়ে প্রবেশ করতে দেখি। তাদের মুখ ঢাকা ছিলো। তাদের শরীরে অনেক অস্ত্রশস্ত্র বাধা ছিলো। তারা কলেজ হোস্টেলে ঢুকেই গুলি চালায়। পাকিস্তানের আরেক সংবাদ মাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বুগতির বরাত দিয়ে জানায়, দুই জঙ্গির আত্মঘাতী বিস্ফোরণেই বেশিরভাগ ক্যাডেট নিহত হয়েছেন। এক জঙ্গি ফ্রন্টিয়ার করপসের (সীমান্ত বাহিনী) গুলিতে নিহত হয়েছে। বুগতি জানান, হামলার পরপরই সীমান্ত বাহিনীর কুইক রেসপন্স ফোর্স, সেনাবাহিনীর এন্টি টেরোরিস্ট ফোর্স এবং লাইট কমান্ডো ব্যাটেলিয়ন অভিযানে নামে। অভিযানে সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারও ব্যবহার করা হয়। বুগতি বলেন, চার ঘণ্টা ধরে অভিযান চলে। পুলিশের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জঙ্গিরা পাঁচ দিক দিয়ে গুলি চালায়। দুই জঙ্গি সামনের গেট দিয়ে প্রবেশ করে এবং নিরাপত্তা প্রহরীকে হত্যা করে। এক জঙ্গি অন্য পাশ দিয়ে দেয়াল টপকিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে।