নূর চৌধুরীকে ফেরতের উপায় খুঁজবে কানাডা

 

স্টাফ রিপোর্টার: আলোচনার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি নূর চৌধুরীর বহিঃসমর্পণের (ফেরত) উপায় বের করার বিষয়ে মতৈক্যে পৌঁছেছে বাংলাদেশ ও কানাডা। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নূর চৌধুরী বর্তমানে কানাডায় পালিয়ে রয়েছেন।

গত শুক্রবার হায়াত রিজেন্সি মন্ট্রিয়েলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এ ব্যাপারে মতৈক্য হয়। বৈঠকের পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হক ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহ্সানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, দু দেশের কর্মকর্তারা বৈঠকে মিলিত হয়ে নূর চৌধুরীকে কানাডা থেকে বহিঃসমর্পণের উপায় বের করবেন। আলোচনার লক্ষ্য হবে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় কার্যকরের জন্য নূর চৌধুরীকে দেশে ফিরিয়ে আনা। তিনি বলেন, সরকার বিভিন্ন ভাবে নূর চৌধুরীকে কানাডা থেকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তার বহিঃসমর্পণের ব্যাপারে দু দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনার মধ্যদিয়ে একটি নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে।

প্রসঙ্গত, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডের দায়ে  মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১২ জনের মধ্যে পাঁচজনের ফাঁসি কার্যকর করে সরকার। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের মধ্যে অন্যতম সাবেক সেনা কর্মকর্তা এই নূর চৌধুরী। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি কানাডায় পালিয়ে রয়েছেন। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কানাডার একটি দৈনিকে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছিলো, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী নূর চৌধুরী ফাঁসির দণ্ড মাথায় নিয়ে কানাডার টরন্টোয় ইটোবিকোকের একটি অ্যাপার্টমেন্টে নিশ্চিন্ত জীবন যাপন করছেন। এতে বলা হয়, ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে নূর চৌধুরীকে বাংলাদেশে ডেকে পাঠালে তিনি দেশে না ফিরে যুক্তরাষ্ট্রের কানাডা সীমান্তবর্তী শহর বাফলোয় পালিয়ে যান। একই বছর তিনি ভ্রমণ ভিসায় স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ কানাডায় চলে আসেন। ওই বছরই কানাডার বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতায় নতুন পাসপোর্ট সংগ্রহ করে কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেন। তবে ২০০২ সালে কানাডার ইমিগ্রেশন ও রিফিউজি বোর্ড তার রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা প্রত্যাখ্যান করে। এ ব্যাপারে তিনি আদালতের আশ্রয় নিলে অনেক সাক্ষ্য-প্রমাণের পর একজন হত্যাকারী বিবেচনা করে নূর চৌধুরীকে কানাডা থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেয় কানাডার একটি উচ্চ আদালত। পরে ফেডারেল আদালতে আইনের ফাঁকফোকর বের করে ৩ বছর লড়াই করেন নূর চৌধুরী। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁর বহিষ্কারাদেশ বহাল থাকে।