দৌলতপুরে সড়ক নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে এলাকাবাসী বন্ধ করে দিয়েছে কাজ

 

দৌলতপুর সংবাদদাতা: কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ধর্মদহ থেকে খলিশাকুণ্ডি পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার সড়ক পুনঃনির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এলাকাবাসী সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার না করার অনুরোধ জানানোর পরও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা তাদের কথা কর্ণপাত না করায় বাধ্য হয়ে এলাকাবাসী সড়কের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।

জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কুষ্টিয়া, সাসটেইনেবল রুরাল ইনফ্রাস্টাকচার ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের (এস আর আই আই পি) আওতায় দৌলতপুর উপজেলার ধর্মদহ-খলিশাকুণ্ডি সড়ক  পুনঃনির্মাণের জন্য প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে টেণ্ডার আহ্বান করলে ৩টি গ্রুপে ভাগাভাগি করে দৌলতপুরের ছাদেকুজ্জামানের বান্ধব (জয়েন্ট ভেনচার) ৩ কোটি ৯৮ লাখ ৪০ হাজার ৬৯৪ টাকা ব্যয়ে সোয়া ৪ কিলোমিটার, কুমিল্লার মো. আব্দুল হাইয়ের বাবলু অ্যান্ড ব্রাদার্স  ৪ কোটি ৩৪ লাখ ১০ হাজার ৬২২ টাকা ব্যয়ে ৬ দশমিক ৩৯৮ কিলোমিটার ও জাহেদুর রানা সোহাগের মণ্ডল এসি (জয়েন্ট ভেনচার) ৪ কোটি ৭৬ লাখ  ৪৪ হাজার ৬‘শ ৮ টাকা ব্যয়ে ৬ দশমিক ৭১৬ কিলোমিটার সড়ক পুনঃনির্মানের কাজ পায়।

গত ২৯ এপ্রিল ২০১৩ তারিখে কাজ শুরু করা হলেও একদিকে কাজের ধীরগতির কারণে এলাকাবাসী চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। অপরদিকে সড়ক নির্মাণে নিন্নমানের উপকরণ ব্যবহার করায় এলাকাবাসী চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

প্রাপ্ত অভিযোগে জানা যায়, রাস্তার পাইলিঙে ২ নম্বর ইট, কোথাও ৩ নম্বর ইটের খোয়া ও পুরাতন ব্যাটস ব্যবহার করা হয়েছে। ঠিকমত রোলার না করায় বেশিরভাগ স্থানে রাস্তা দেবে গেছে। যদি কর্পেটিঙের আগে এ সকল অনিয়ম চিহ্নিত করে ব্যবস্থা না নেয়া হয় তবে রাস্তাটি অল্প দিনেই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়বে। সড়কটির খলিশাকুণ্ডি অংশের ডি-ফাইভ এম ব্রিজ থেকে খলিশাকুণ্ডি বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত রাস্তার কাজ সবচেয়ে নিম্নমানের হয়েছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে। ২ নম্বর ও ৩ নম্বর ইটের খোয়ার সাথে পুরোনো ব্যাটস এবং পরিত্যক্ত ভবনের টালি খোয়া হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া দরপত্রে উল্লেখিত খোয়া ও বালির মিশ্রণে যৎ সামান্য খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে।

অভিযোগকারীরা জানান, ঠিকাদারদের সাথে প্রকৌশলী জিল্লুর রহমানের যোগসাজস থাকায় তিনি কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় এলাকাবাসী গত বৃহস্পতিবার নিরূপায় হয়ে এ রাস্তার নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে কথা বলার সেখানে ঠিকাদার বা সংশ্লিষ্ট কাউকে পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা প্রকৌশলী জিল্লুর রহমানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এলজিইডি কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কবীর জানান, সড়কটি বিদেশি (জার্মান সাহায্যপুষ্ট) অর্থায়নে নির্মিত হচ্ছে। এখানে অনিয়ম ও দুর্নীতির কোনো সুযোগ নেই। এরপরও যদি ঠিকাদার বা কেউ অনিয়ম বা দুর্নীতি করে থাকে তবে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।