দুর্নীতির দায়ে গাংনী হাইস্কুলের সভাপতি পদ থেকে মোশারফকে অব্যাহতি

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী মডেল-পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ পরিচালনা পর্যদের (নির্বাহী কমিটি) সভাপতির পদ থেকে মোশারফ হোসেনকে অব্যাহতি দিয়েছে যশোর শিক্ষা বোর্ড। দুর্নীতির অভিযোগে কলেজ পরিদর্শক অমল কুমার বিশ্বাস স্বাক্ষরিত এক পত্রে গতকাল সোমবার এ আদেশ দেয়া হয়। বর্তমান পরিচালনা পর্যদের অবশিষ্ট মেয়াদে মেহেরপুর জেলা প্রশাসককে সভাপতি হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হয়। এ সংক্রান্ত পত্র বোর্ড থেকে মেহেরপুর জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা অফিসার ও মোশারফ হোসেনের কাছে প্রেরণ করেছে বোর্ডের সংশ্লিষ্ট শাখা।

যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অমল কুমার বিশ্বাস স্বাক্ষতির পত্রসূত্রে জানা গেছে, মোশারফ হোসেন গাংনী মডেল-পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ নির্বাহী কমিটির সভাপতি থাকাকালে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফরম পুরণের নামে সরকার নির্ধারিত ফি’র অতিক্তি অর্থ আদায় করে আত্মসাৎ করেছেন। বিদ্যালয়ের পুকুর ইজারার ও বিদ্যালয়ের জমিতে নির্মিত দোকান ভাড়ার টাকা বিনা রশিদে আদায় করে আত্মসাৎ করেছেন। শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্য ও প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয়ের হিসাব যথাযথভাবে সংরক্ষণ না করে নিজের খেয়াল খুশিমত হিসাব পরিচালনা করাসহ নানাবিধ অর্থিক দুর্নীতির সাথে তিনি জড়িত। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক ও জেলা শিক্ষা অফিসারের তদন্তে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এ বিষয়ে শিক্ষা বোর্ড থেকে তাকে চূড়ান্ত কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। তিনি যে জবাব দিয়েছেন তা তদন্ত প্রতিবেদনের সাথে সম্পূর্ণ অসঙ্গতিপূর্ণ। তাই মোশারফ হোসেনকে বিদ্যালয়ের নির্বাহী কমিটির সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।

অভিযোগ ও অব্যাহতি বিষয়ে জানতে চাইলে মোশারফ হোসেন বলেন, এটি আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। হয়রানি করার জন্য তারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। তদন্তকারী কর্মকর্তারা আমাকে কিছুই বলেননি। অব্যাহতিপত্রের বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে কোনো পত্র আমি পাইনি। তবে অব্যাহিত পত্রের সতত্যা নিশ্চিত করেছেন জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সুভাষ কুমার গোলদার।

গাংনী উপজেলা যুবলীগ সভাপতি মোশারফ হোসেন বেশ কয়েক বছর ধরে ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই নিয়োগ বাণিজ্যসহ বিদ্যালয় পরিচালনার বিভিন্ন বিষয়ে আলোচিত-সমালোচিত। এছাড়াও তিনি হিজলবাড়িয়া ও বামন্দী মাধ্যমিক বিদ্যালয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করাকালে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগে অভিযুক্ত। হিজলবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি পদ ছাড়তে হলেও বামন্দীতে বহাল রয়েছেন। সম্প্রতি বামন্দী-নিশিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মার্কেট নির্মাণ নিয়ে তিনি শারীরিকভাবেও লাঞ্চিত হন। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়। বিষয়য়টি গড়ায় মামলা পর্যন্ত।