দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর দামুড়হুদার আলোচিত হাবিবের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে বেশকিছু পাওনাদার

প্রতিকার চেয়ে তিন পাওনাদারের থানায় লিখিত অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টার: দামুড়হুদার বিভিন্ন ফাস্টফুড ও চায়ের দোকানে হাজার হাজার টাকা বাকি খেলেও বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকিসহ মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার ভয়ভীতি দেখানোর ফলে এতোদিন কেউ কোনো অভিযোগ করতে সাহস দেখায়নি। দীর্ঘদিন চুপ থাকার পর অবশেষে গত সোমবার ওই আলোচিত হাবিব ওরফে মুতুরে হাবির বিরুদ্ধে তিন পাওনাদার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, দামুড়হুদা বাজারের সোনালী ব্যাংক সংলগ্ন ফাস্টফুড ব্যবসায়ী মহাসিন আলীর দোকান থেকে প্রায় ৩ বছর ধরে বিভিন্ন রকমের ফাস্টফুড ও বেনসন সিগারেট বাকিতে কেনে। টাকা চাইলে বলে লিখে রাখ পরে দিয়ে দেবো। ৩ বছরে তার কাছে মোট ১৫ হাজার ১০৫ টাকা দোকান বাকি পাওনা হয়। টাকা চাইলে আজ দেবো-কাল দেবো বলে কিন্তু টাকাতো দেই-ই না উল্টো বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দেয়। গত ২ অক্টোবর সে আমার দোকানে এসে পুনরায় বাকি চাই। আমি বাকি দিতে পারবো না বললে সে আমাকে তেড়ে মারতে আসে এবং বলে তোর দোকানে ফেনসিডিল রেখে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেবো। আমি ভয়ে এতোদিন চুপ ছিলাম। দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি বিষয়টি সম্প্রতি জানতে পেরে আমাকে একটি লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরামর্শ দেন। দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ডের চা দোকানি ফজলুল হক ফজু লিখিত অভিযোগ করে বলেছেন, প্রায় ২-৩ বছর ধরে বিভিন্ন ফাস্টফুড, সিগারেট, চাসহ অন্যান্য মালামাল বাকিতে নেয়। টাকা চাইলে বলে লিখে রাখ পরে দিয়ে দেবো। তার কাছে মোট ৬ হাজার ৩৩৫ টাকা পাওনা রয়েছে। টাকা চাইলে আজ দেবো-কাল দেবো বলে কিন্তু টাকা না দিয়ে উল্টো বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দেয়। গত সেপ্টেম্বর সে আমার দোকানে এসে বাকি চাই। আমি বাকি দিতে পারবো না বললে সে আমাকে বলে তোর গাছে বেঁধে পেটানো হবে। তোর দোকানে ফেনসিখোররা আসে। তোর দোকানে ফেনসি রেখে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেবো।
দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদ গেট সংলগ্ন ফাস্টফুড ব্যবসায়ী ইব্রাহিম হোসেন লিখিত অভিযোগে বলেছেন, প্রায় দু বছর ধরেও তার দোকানে সিগারেটসহ বিভিন্ন মালামাল বাকিতে নেয়। টাকা চাইলে বলে লিখে রাখ। প্রায় ৬ মাস আগে আমি তার কাছে টাকা চাইলে রাত সাড়ে ৯টার দিকে সে আমার দোকানে এসে আমার দোকানের দামি গ্লাস এবং চায়ের কাপ ভাঙচুর করে চলে যায়। এছাড়া গত মাসে সে আমার দোকানে এসে পুনরায় বাকি চাই। আমি তার কাছে বাকি টাকা চাওয়ার সাথে সাথে চোখ মুখ খিটমিট করে আমাকে তেড়ে মারতে আসে। এতোদিন ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাইনি। এছাড়া ওই আলোচিত হাবিবের কাছে উপজেলা গেট সংলগ্ন এক ফাস্টফুড ব্যবসায়ী ৩০ হাজার, ডাকবাংলোর সামনের এক ফার্নিচার ব্যবসায়ী ৫০ হাজার টাকাসহ বেশকিছু দোকানদার মোটা অঙ্কের টাকা পেলেও ভয়ে চাইতে সাহস পাননা। তাদের মধ্যে কেউ কেউ থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও জানা গেছে।
দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আবু জিহাদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, ৩ জনের লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্ত চলছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে অন্যান্য পাওনাদারও যদি লিখিত অভিযোগ করেন তা আমলে নেয়া হবে এবং তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে। ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই।