দামুড়হুদা উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নেতৃত্বে সঙ্ঘবদ্ধ চক্রের আবারও অপতৎপরতা

 

 

আনন্দ স্কুলের লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অপচেষ্টা

স্টাফ রিপোর্টার: দামুড়হুদায় আনন্দ স্কুলের শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের নামে আসা কয়েক লাখ টাকা আবারও আত্মসাতের অপতৎপরতা শুরু করেছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নূর জাহানসহ সঙ্ঘবদ্ধচক্র। বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসক ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন উপজেলার ৪৪টি স্কুলের ভুক্তভোগী শিক্ষক/শিক্ষিকাগণ।

আনন্দ স্কুলের ভুক্তভোগী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় এলাকায় ঝরেপড়া শিশুদের পড়া-লেখার জন্য রিচিং আউট অব স্কুল চিলড্রেন (রক্স প্রকল্প) নামে একটি প্রকল্প চালু রয়েছে। প্রকল্পের শুরুতেই ৩টি এনজিও প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে উপজেলায় প্রায় দুশতাধিক স্কুল নিয়ে এ প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়। প্রকল্পের শুরু থেকেই নানা অনিয়ম আর দুর্নীতির কারণে স্কুল পরিচালনার দায়িত্ব থেকে সংশ্লিষ্ট এনজিও প্রতিষ্ঠান সমূহকে অব্যাহতি দেয়া হয়। পরবর্তীতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে প্রায় দেড়শতাধিক স্কুল বন্ধ ঘোষণা করে উপজেলা শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালিত হতে থাকে। বর্তমানে উপজেলায় ৪৪টি স্কুলে ওই শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে এলেও শিক্ষক-শিক্ষিকাসহ স্কুলের শিশু শিক্ষার্থীরা চলতি বছরের (জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ১ম সেমিস্টারের) বেতন-ভাতা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। ওই সমস্ত স্কুলের নামে আসা (বরাদ্দকৃত ৫টি খাতের) শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতনভাতা বাবদ ৫ লাখ ২৮ হাজার, শিক্ষার্থীভাতা বাবদ ৩ লাখ ১৬ হাজার ৮শ, স্কুলঘর ভাড়া বাবদ ৭০ হাজার ৪শ, উপকরণ বাবদ ৯৫ হাজার ৪০ এবং স্কুল মেরামত বাবদ ৪৪ হাজার টাকা মোট ১০ লাখ ৫৪ হাজার ২৪০ টাকা আত্মসাতের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার নূর জাহান ও তার সঙ্ঘবদ্ধচক্রের সদস্যরা।

ভুক্তভোগী শিক্ষক-শিক্ষিকারা আরো জানান, উপজেলা শিক্ষা অফিসার নূর জাহান ও এ প্রকল্পে কর্মরত টিসি মোস্তাফিজুর রহমান আমাদের মৌখিকভাবে বলেন, আপনাদের সমস্ত স্কুল বাতিল করা হয়েছে। বিধায় আপনারা টাকা পাবেন না। ব্যাংকে গেলে ব্যাংক কর্মকর্তাও টালবাহানা করছেন। ট্রেনিং কোঅর্ডিনেটর ও ব্যাংকের লোকজন সঠিক কোনো উত্তর দিতে পারেননি। এ সংক্রান্তে আমরা গত ২৫ জুন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলার চেয়ারম্যানের মাধ্যমে প্রকল্প পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি। কিন্তু অদ্যবধি এর কোনো প্রতিকার আমরা পাইনি। বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসক ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন উপজেলার ৪৪টি স্কুলের ভুক্তভোগী শিক্ষক/শিক্ষিকাগণ।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে দামুড়হুদা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নূর জাহান ও তৎকালীন ইউএনও সোনিয়া আফরিনের যোগসাজশে এ আনন্দ স্কুল প্রকল্পের প্রায় ২৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। যা বর্তমানে দুর্নীতি দমন কমিশনে তদন্তাধীন বলে জানা গেছে।