দামুড়হুদায় সার ডিলাররা নিজেদের খেয়াল খুশিমতো সার বিক্রি করছেন

লাইনে দাড়িয়েও পর্যাপ্ত সার পাচ্ছেনা কৃষকরা

 

স্টাফ রিপোর্টার: প্রশাসনের নজরদারী না থাকায় চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় সার ডিলাররা খেয়াল খুশিমতো কারবার করছেন। ইউনিয়নভিত্তিক এসব ডিলার দেয়া হলেও তারা স্ব স্ব ইউনিয়নে না গিয়ে দামুড়হুদা বাজারে বসেই দীর্ঘদিন ধরে কারবার করে চলেছে। এতে সাধারণ কৃষকরা চরম বিপাকে পড়েছে। কৃষকরা দীঘক্ষণ দাঁড়িয়ে রোদে পুরে সার কিনতে হচ্ছে। ফলে ইউরিয়া সারের সঙ্কট দেখা দিয়েছে।

গতকাল শনিবার এলাকার চাষিরা দাবি করেছেন, ইউনিয়নভিত্তিক সার ডিলারদেরকে অবিলম্বে নিজ নিজ এলাকায় সার বিক্রির ব্যবস্থা চালু করার ব্যবস্থা নিতে হবে। পক্ষান্তরে ডিলারদের অনেকেই বলেছেন, অবরোধের কারণে সার আনা যাচ্ছে না। এ কারণে সংকট দেখা দিয়েছে। এ যুক্তি খণ্ডন করে কৃষকদের অনেকেই বলেছেন, অবরোধের অজুহাতে সংকটের কথা বলা হলেও চড়াদরে ব্যবসায়ীদের কাছে তারা বিক্রি করে দিচ্ছেন। ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত দামে কৃষিকদের মাঝে বিক্রি করছে। আর ডিলারদের কাছে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়েও সার না পেয়ে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে।

দামুড়হুদা শহরে চারজন সারডিলার রয়েছেন। এরা হলেন, ইয়াছিন আলী, হানিফ, ওলিউল ও রবিউল। এদের মধ্যে ওলিউল দামুড়হুদা ইউনিয়নে এবং বাকি তিনজন পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন ইউনিয়নে। অথচ ওই তিনজনের আশপাশের বিভিন্ন ইউনিয়নে থাকার কথা থাকলেও তা না করে দামুড়হুদায় ব্যবসা করছেন। তিন ইউনিয়নের অন্তত ৩২টি গ্রামের কৃষকরা ভোগান্তিতে পড়েছেন।

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর ইউনিয়নের কৃষক আইনুদ্দিন জানান, তিনি ২ বিঘা জমিতে ভুট্টার চাষ করেছেন। অথচ তাকে ১০ কিলোমিটার দূরে দামুড়হুদায় এসে সার কিনতে হচ্ছে। তার কয়েক বস্তা সার দরকার, কিন্তু তিনি ১ বস্তার বেশি সার পাচ্ছে না। জুড়ানপুর ইউনিয়নের সার ডিলার দামুড়হুদা বাজারের ইয়াছিন আলী জানান, তিনি ৯৮ মে. টন সার বরাদ্দ পেয়েছেন। দামুড়হুদায় কৃষকদের মাঝে ১ বস্তা করে ইউরিয়া সার বিক্রি করছেন তিনি। কাতারের তৈরি ইউরিয়া সার দাম বস্তাপ্রতি ৮শ টাকা।

দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃপাংশু শেখর দে জানান, দামুড়হুদা উপজেলায় ১০ ইউনিয়নভিত্তিক সার ডিলার রয়েছে। তবে তারা ব্লক ওয়াইজ সার বরাদ্দ দেয়। সারের সঙ্কট দেখা দেয়ায় কৃষি বিভাগের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে সার বিক্রি করা হচ্ছে। যারা ইউনিয়নভিত্তিক ডিলার নিয়োগ পেয়েছেন তাদেরকে নিজ ইউনিয়নে সার বিক্রি করতে হবে।

আমাদের আলুকদিয়া প্রতিনিধি জানিয়েছেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের আলুকদিয়া ও ভালাইপুরসহ গোকুলখালী এলাকাতেও সার নিয়ে তুঘলুকি কারবার শুরু হয়েছে। আলুকদিয়ার সারব্যবসায়ী রানা বিশ্বাসসহ কয়েকজন বলেছেন, ইউরিয়া সার নেই। কয়েকজন ব্যবসায়ীর দোকানে সার থাকলেও ৫০ কেজির এক বস্তা সারের দাম হাঁকছেন ১ হাজার টাকা। গোকুলখালী বাজারের যে ক’টি দোকানে সার আছে তারা একই ওজনের সারের বস্তা বিক্রি করছে ৯৩০ থেকে সাড়ে ৯শ টাকা দরে। কৃষকরা তাদের চাহিদা মতো সার না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। অবরোধের কারণেই সারের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। আর সেই সুযোগে ব্যবসায়ীরা সারের দাম বাড়িয়ে দিয়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ে মেতে উঠেছেন বলে স্থানীয় কৃষকদের অনেকেই অভিযোগ করেছেন।