দামুড়হুদায় বাল্যবিয়ের অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালতে কনের পিতা ও কাজির জেল-জরিমানা

 

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদায় ভুয়া জন্মসনদ দেখিয়ে রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই রাতের বেলা বাল্যবিয়েতে সহযোগিতার অপরাধে কনের পিতা বিষ্ণুপুর গ্রামের বেল্টু মিয়া ও জুড়ানপুর ইউনিয়নের সংশ্লিষ্ট কাজি মোখলেছুর রহমানের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে এক হাজার টাকা করে জরিমানাসহ উভয়কেই এক মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফরিদুর রহমান ওই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।

উল্লেখ্য, গত ৪ মার্চ শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামের বেল্টু মিয়ার ১৩ বছর বয়সি মেয়ে চম্পা খাতুনের একই ইউনিয়নের কলাবাড়ি গ্রামের মানিক মিয়ার ছেলে জামিনুল ইসলামের সাথে ৫০ হাজার টাকা দেনমোহরে বাল্যবিয়ে সম্পন্ন হয়। কাজির অনুমতিতে তার সহযোগী হিসেবে বিষ্ণুপুর গ্রামের মাও. রবিউল ইসলাম ওই বাল্যবিয়ে পড়ান। এ সংক্রান্তে পরদিন শনিবার দৈনিক মাথাভাঙ্গায় বাল্যবিয়ের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের হস্তক্ষেপ কামনা করে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদন প্রকাশের পরপরই কাজির সহযোগী বিষ্ণুপুর গ্রামের মাও. রবিউল ইসলাম এলাকা ত্যাগ করে রাজশাহী পালিয়ে যায়। দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফরিদুর রহমান গতকাল রোববার বিকেলে বিষয়টি সরেজমিন তদন্তের জন্য দামুড়হুদা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আশরাফ হোসেন ও উপসহকারী প্রকৌশলী নূরুজাজামানকে নির্দেশ দেন। তদন্তকালীন কনের মা-বাবা বাল্যবিয়ে টাকার বিনিময়ে কাজির অনুমতিতেই পড়ানো হয়েছে বলে দায়িত্বপ্রাপ্ত ওই দু কর্মকর্তাকে জানান। পরে সংশ্লিষ্ট কাজি মোখলেছুর রহমানসহ তাদের উভয়কেই উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে নেয়া হয়। এ সময় কাজির নিকাহ রেজিস্ট্রার চেক করে দেখা যায় ৬৩টি কাবিনে কনের বয়স লেখা নেই এবং রেজিস্ট্রারের যে সমস্ত অংশ পূরণ করার পর বিয়ে পড়ানোর কথা সেই সমস্ত অংশের বেশির ভাগই ফাঁকা। এছাড়া জেলা রেজিস্ট্রার কর্তৃক নিকাহ বইতে কোনো প্রত্যয়ন নেই। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার কনের মাকে ছেড়ে দেন এবং অভিযুক্ত কাজী ও কনের পিতার বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে ওই আদেশ দেন। দামুড়হুদা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রাজকুমার পাল, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আশরাফ হোসেন, উপসহকারী প্রকৌশলী নূরুজাজামান, দামুড়হুদা মডেল থানার এসআই নাসিরুল ইসলাম ও সিএ জহিরুল ইসলাম ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা কাজে সহযোগিতা করেন।