দামুড়হুদায় অবরোধের কারণে সবজিচাষিদের মাথায় হাত

দামুড়হুদা অফিস: চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা উপজেলার সবজিচাষিরা রাজনৈতিক অবরোধের কবলে পড়ে তাদের উৎপাদিত পন্য নিয়ে হিমশিম খেতে শুরু করেছে। আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার পরিবর্তে তাদের লোকসানের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার ধারাবাহিকতা এভাবে চলতে থাকালে তাদের উৎপাদিত পন্যের বাজারদর সঠিকভাবে না পেলে তাদের মেরুদণ্ড ভেঙে যাবে এমন মন্তব্য সবজিচাষিদের। 

উপজেলা কৃষি অফিসের সুত্রে জানা গেছে, চলতি রবি মরসুমে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ও ১টি পৌরসভা এলাকায় এবার ১৫শ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়। কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৫০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের সবজির আবাদ কম হয়েছে।

গতকাল বুধবার দামুড়হুদা উপজেলার সদর হাটে বিভিন্ন জাতের সবজি বিক্রি করতে আসা চাষিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা নিজের বুদ্ধি মত্তায় উন্নত জাতের বেগুন, বাঁধাকপি, ফুলকপি, মুলা, পেঁপে, পালংশাক, সিম, লাউ, বরবটি, করল্লাসহ নানা জাতের সবজি উৎপাদন করে হাটে পাইকারি বিক্রির জন্য নিয়ে আসে ভাল দাম পাবে এই আশায়। কিন্তু দেশ জুড়ে রাজনৈতিক অবরোধের ধারাবাহিকতার  কারণে যানবহন স্বাভাবিকভাবে চলাচল করছে না। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সবজির পাইকারি ক্রেতারা না আসার কারণে চাষিরা তাদের উৎপাদিত পণ্য পইকারি দরে বিক্রি করতে পারছেন না। ফলে হাট-বাজারে স্থানীয় চাষিদের নানা জাতের সবজি বাজারে জড়ো হওয়ার কারণে সবজি কম দরে বিক্রির প্রতিযোগিতা লেগে যায়। ফলে বাজার দরে ধস লাগে। এতে সবজিচাষিদের লোকসানে হলেও লাভবান হয় ক্রেতারা। এভাবে অবোরধের ধারাবাহিকতা চলতে থাকালে সবজিচাষিদের মেরুদণ্ড ভেঙে যাবে এমন মন্তব্য তাদের। হাটে পাইকারি বেগুন বিক্রি করতে আসা জয়রামপুরের  আনছার আলী ও আলী হোসেন বলেন, হাটে এসে বেগুনের দর শুনে মন মেজাজ খারাপ হয়ে গেছে। কারন হিসেবে বলেন, ক্ষেত থেকে মজুর দিয়ে ও নিজেরা বেগুন তুলে হাটে এনে খরচ উঠবে না। তবু রেহাই নেয় বিক্রি করতে হবে। হাটে দু-একজন যারা পাইকারি দরে বেগুন কিনতে এসেছে তারাও ইচ্ছেমতো দর হাকছে। পাইকারি বেগুন ব্যবসায়ী শহিদ ও সুমন আলী বলেন, আজ বাজারে বেগুনে দরে ধস নেমেছে। অবরোধের কারণে ট্রাক চলাচল না করায় বেগুন কিনবো না। বাজার দেখতে এসেছি। আবার সুযোগ পেলে পথ চলার জন্য ট্রেনে কিছু বেগুন খুলনায় চালান করতেও পারি। সব ব্যাপারি মিলে পনের থেকে কুড়িটা ঢোপ হলে আমরা বাজারদর জেনে নিয়ে ঢাকা কিংবা খুলনায় পাঠিয়ে দিই। দেশের রাজনৈতিক পেক্ষাপট স্বাভাবিক থাকলে চাষিদের উৎপাদিত বেগুনসহ নানা জাতের সবজি এলাকার চাহিদা মিটিয়ে হাট থেকে পাইকারি কাঁচামাল ব্যবসায়ীরা চাষিদের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্যে সবজি কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে  উভায়ে লাভবান হওয়া যাবে বলে মনে করছেন ব্যাপারিরা।