দামুড়হুদার হাউলীর মাঠে অধিকাংশ ভুট্টাক্ষেতে দেখা দিয়েছে পাতাপোড়া রোগ

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদার হাউলী ইউনিয়নের অধিকাংশ ভুট্টাক্ষেতে দেখা দিয়েছে পাতাপোড়া রোগ। অতিরিক্ত মাজরা পোকার আক্রমণ, ছোট সাইজের মোচা বের হওয়ার পাশাপাশি দেখা দিয়েছে পাতাপোড়া রোগ। ফলে মোটা অঙ্কের লোকসানের আশঙ্কা করছেন ক্ষতিগ্রস্ত ভুট্টাচাষিরা। বেসরকারি এনজিও প্রতিষ্ঠান ব্র্যাকের উৎপাদিত উত্তরণ-২ নামের ভুট্টার বীজ জীবাণুমুক্ত না করেই বাজারজাত করায় এ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা।

দামুড়হুদার পুরাতন হাউলী গ্রামের ভুট্টাচাষি শুকুর আলী জানান, এ বছর তিনি সাড়ে ৫ বিঘা জমিতে উত্তরণ জাতের ভুট্টার আবাদ করেছেন। অতিরিক্ত পরিমাণে মাজরা পোকার আক্রমণসহ গাছ বড় হওয়ার পরপরই দেখা দিয়েছে পাতাপোড়া রোগ। নানাবিধ চেষ্টা করেও কোনো কাজ হয়নি। পুরাতন হাউলীর মাঠেই বিভিন্ন চাষির প্রায় দেড়শ বিঘা জমিতে এ সমস্যা দেখা দিয়েছে। বীজগুলো খুবই নিম্নমানের এবং জীবাণুমুক্ত না করেই বাজারজাত করা হয়েছে বলে চাষিদের ধারণা।

একই গ্রামের ভুট্টাচাষি আব্দুর রহমান, গোলাম হোসেন, মকিম, ইয়াকুব আলী, ওমর আলী, আজিজুল হক, জলিল মণ্ডল শহিদুল ইসলাম, মতিন, নুরুসহ বেশকিছু ক্ষতিগ্রস্ত ভুট্টাচাষি অভিন্ন ভাষায় জানালেন তাদের অভিযোগের কথা। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃপাংশু শেখর বিশ্বাস জানান, দামুড়হুদা উপজেলায় চলতি মরসুমে ভুট্টার আবাদ হয়েছে প্রায় ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে শুধুমাত্র হাউলী ইউনিয়নেই বিভিন্ন জাতের ভুট্টার আবাদ হয়েছে প্রায় ২ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে। এ বছর অন্যান্য জাতের ভুট্টার বীজে তেমন সমস্যা না হলেও ব্র্যাকের উৎপাদিত উত্তরণ-২ নামক বীজে অতিরিক্ত মাজরা পোকার আক্রমণ, মোচার সাইজ ছোট হওয়াসহ পাতা পুড়ে ঝলসে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী চাষিরা। গত বছরেও উত্তরণ বীজে বেশকিছু সমস্যা দেখা দেয়ার ফলে ওই বীজ না নিতে চাষিদের পরামর্শ দিয়েছে কৃষি অধিদফতর। জীবাণুমুক্ত কি-না সেটা পরীক্ষা না করে বলা মুশকিল। তবে অতিরিক্ত ঠাণ্ডা এবং আবহাওয়ার তারতম্যের ফলে এ সমস্যা হতে পারে বলে তাদের ধারণা।

ব্র্যাকের উত্তরণ ভুট্টার বীজ ডিলার দর্শনার বীজ ব্যবসায়ী মেসার্স বি-রহমান অ্যান্ড সন্সের সত্ত্বাধিকারী সান্টু মিয়া জানান, আমার জানামতে বাংলাদেশে যতো বীজ প্রসেসিং সেন্টার আছে তার মধ্যে ব্র্যাকেরটি সবচেয়ে উন্নতমানের। তাদের উৎপাদিত বীজের কোয়ালিটিও ভালো। অতিরিক্ত ঠাণ্ডা এবং বেশি পরিমাণে ইউরিয়া ও সালফার জাতীয় সার প্রয়োগের ফলে এ সমস্যা হতে পারে। বিষয়টি আমি ব্র্যাক কর্তৃপক্ষকে জানাবো।