দামুড়হুদার চাষিরা বেগুন চাষে আর্থিক লাভবান হচ্ছে

তাছির আহমেদ: দামুড়হদা উপজেলার চাষিরা বেগুন চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। বিশেষ করে উপজেলার হাউলী ও সদর ইউনিয়নের বেগুন চাষিরা আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ায় তাদের মুখে ফুলফোটা হাসি দেখা গিয়েছে। এ সকল চাষিরা কৃষি অফিসের সহযোগিতা ছাড়াই বেগুন উৎপাদন করে চলেছে। চাষিদের উৎপাদিত বেগুন এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দামুড়হুদার প্রতি হাটে হাটে এলাকার ব্যাপারীরা চাষিদের (খেতোয়াল) কাছ থেকে বেগুন কিনে ঢাকা ও খুলনায় সরবরাহ করছে।

কৃষি অফিসের হিসেব মতে, চলতি বছর উপজেলায় চারশত ত্রিশ হেক্টর গ্রীষ্মকালীন খরিপ এক মরসুমে উফশি জাতের বেগুন আবাদ করা হয়েছে। দামুড়হুদার হাটে বেগুন বিক্রি করতে আসা চাষিদের সাথে আলোচনা করে জানা গেছে, বিগত পাঁচ/ছয় বছর ধরে এ দু ইউনিয়নে প্রায় পাঁচ শতাধিক চাষি উফশি জাতের বেগুন চাষ করে আসছে। তারা নিজের বুদ্ধি মত্তায় উন্নতজাতের বেগুন উৎপাদন করে থাকে। কৃষি অফিসের সহযোগিতা বা পরামর্শ তারা যেমন পায়নি তেমন নেয়নি। এ সকল চাষিরা পরস্পরের যোগাযোগে বেগুন চাষ করে থাকে।

প্রচণ্ড গরমে বেগুনের জমিতে প্লেট লেগেছে এ কারণে আজ বাজার দর খুব ভালো। কথাগুলো বললেন, গত বুধবার দামুড়হুদার হাটে আসা জয়রামপুর বারুইপাড়ার খেতোয়াল আনছার আলী ও ডাক্তারপাড়ার ইনসান আলী। সেই সাথে আরও বলেন, বেগুনবীজ থেকে চারা আমরা নিজেরা তৈরি করি। তারপর আবাদের সময় হলে জমিতে চারা লাগিয়ে নিয়মিত পরিচর্যার সাথে সেচ, সার ও কীটনাশক দিয়ে বেগুন উৎপাদন করি। বেগুনে পোকা রোধ করতে কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয় বেশি বেশি। এ বছর এক বিঘা জমিতে বারও হাজার টাকা খরচ করে বেগুন চাষ করেছি। প্রতি সপ্তায় ৫ মণ বেগুন ওঠে। এ পর্যন্ত বিশ হাজার টাকার বেগুন বিক্রি করেছি, এখনও বিশ হাজার টাকার বেগুন বিক্রি হবে বলে আশা করছি। চাষি পর্যায়ে কৃষি অধিদপ্তর থেকে তাদের কোনো প্রশিক্ষণ দেয়া হয়নি। যদি উন্নত প্রশিক্ষন দেয়া হয় তাহলে কীটনাশক ছাড়াই বেগুন উৎপাদন করতে পারবো বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।

ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম ও সুজন আলী বলেন, এখন বাজার দর ভালো। আমরা খেতোয়ালদের কাছ থেকে বেগুন কিনে লেবার দিয়ে চটের ঢপে সাজায়। একটা ঢপে ষোল/সতের মণ বেগুন ধরে। সব ব্যাপারি মিলে পনের থেকে বিশ ঢোপ হলে আমরা বাজারদর জেনে নিয়ে ঢাকা অথবা খুলনায় পাঠিয়ে দিই। বর্তমানে ঢপের মাথা বিক্রি হচ্ছে ত্রিশ/পয়ত্রিশ টাকা, ঢপের মাজা পঁচিশ থেকে আটাশ আর তলা বিক্রি হচ্ছে পনেরো/বিশ। সব মিলিয়ে ঢপ প্রতি চার/পাঁচ হাজার টাকা লাভ থাকে। এ মরসুমে চাষিরা যেমন খুশি আমরাও তেমন খুশি।