দামুড়হুদার কোমরপুরের ফজলুনার্সারি করে স্বাবলম্বী

 

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কোমরপুর গ্রামের ফজলুল হক দীর্ঘ বাইশ বছর ধরে পরের জমি লিজ নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করে তিল তিল করে গড়ে তোলা দেশি-বিদেশি নানা জাতের ফলদ,বনজ ও মসলা জাতীয় নার্সারি করে আজ স্বাবলম্বী। উপজেলা পর্যায়ে এবারের ফলদ বৃক্ষ মেলার স্টলে তার নার্সারির সংগ্রহে ছিলো এগ্রোফুড়, ম্যাঙ্গেডুরি, রাংভোটান, ক্ষীরখেজুর, চায়না ড্রাফ আম, চায়না সবেদা, আপেল, বিদেশি মালটা, আঙ্গুর, এলাচ, লবঙ্গ, অর্কেট, থাইরঙ্গনসহ দেশি জাতের আম, জাম, লিচু, কাঁঠালসহ নানা জাতের ফল-ফুলের চারার বিশাল সমারোহ।

উপজেলার কোমরপুর গ্রামের নবু হোসেনের ছেলে ফজলুল হক বলেন, নিজের জমি নেই। পরের চার বিঘা জমি বছর প্রতি দশ হাজার টাকায় লিজ নিয়ে অনেক পরিশ্রম করে ২২ বছর ধরে এই নার্সারি গড়ে তুলেছি। দেশ-বিদেশের নানা জাতের ফলদ, বনজ, মসলা ও দেশি-বিদেশি নানা জাতের ফল-ফুলের চারা তার সংগ্রহে রয়েছে। দামুড়হুদা-কার্পাসডাঙ্গা সড়ক ধরে কার্পাসডাঙ্গার দিকে এগিয়ে গেলে কোমরপুর গ্রামের ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় ভাই ভাই নার্সারির দেখা মিলবে। তার নার্সারিতে এবার সংগ্রহে রয়েছে বিদেশি এগ্রোফুড়, ম্যাঙ্গেডুরি, রাংভোটান, ক্ষীরখেজুর, চায়না ড্রাফ আম, চায়না সবেদা, আপেল, বিদেশি মালটা, আঙ্গুর, এলাচ, লবঙ্গ, অর্কেট, থাইরঙ্গন, আম,জাম, লিচু ও কাঁঠালসহ নানা জাতের ফুল-ফলের দশ লক্ষাধিক টাকার চারা। এই নার্সারিতে নানা জাতের ফলদ, বনজসহ নানা প্রজাতির চারা রয়েছে। প্রতিবছর বৃক্ষ মেলাকে সামনে রেখে নার্সারিতে নানা জাতের ফলদ, বনজ ও ওষুধি চারা বিক্রির জন্য প্রস্তুত করে রাখি। নার্সারি থেকে সব সময় চারা বিক্রি করা হয়। তিনি আরও বলেন, দামুড়হুদা-চুয়াডাঙ্গা সড়কের পোড়াপাড়া নামক স্থানে নার্সারিকে কেন্দ্র করে রীতিমত বর্ষা মরসুম জুড়ে নানা জাতের ফলদ, বনজ ও ওষুধি গাছের চারা বিক্রি কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। আষাঢ় থেকে প্রায় কার্তিক মাস পর্যন্ত চারা বিক্রি চলে। নার্সারিকে কেন্দ্র করে অনেক বেকার যুবক বেঁচে থাকার পথ খুঁজে পেয়েছে। প্রতি বছর এলাকার নার্সারি থেকে এলাকার মানুষ বিভিন্ন প্রজাতির চারা কিনে নিয়ে বাগান তৈরি করছে। এলাকায় যতো বেশি বাগান তৈরি হবে নানা জাতের চারা ততো বেশি বিক্রি হবে। এই নার্সারির অর্জিত আয় রোজগার দিয়ে সচ্ছলতার সাথে সংসার চলছে। এই নার্সারি করে আজ আমি স্বাবলম্বী হওয়ার পথ খুঁজে পেয়েছি। সেইসাথে আমার পথ চলা এই স্বপ্ন আজ সার্থক হয়েছে। বেকার যুবক যারা আজও চাকরি বা কোনো কর্মসংস্থানের পথ খুঁজে পাননি তাদের প্রতি নার্সারি করে স্বাবলম্বী হওয়ার অনুরোধ রইলো।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সেলিম হোসেন বলেন, উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ৪৪টি নাসারি রয়েছে। এর মধ্যে কুড়ুলগাছি ৪টি, নতিপোতায় ১১টি,জুড়ানপুর ৩টি, পারকৃষপুর-মদনা ৩টি, হাউলী ৫টি, কার্পসডাঙ্গা ৪টি, দামুড়হুদা ইউনিয়নে ৮টি ও দর্শনা পৌরসভায় ৬টি নার্সারি রয়েছে। এ সমস্ত নার্সারির জমির পরিমাণ ৫০ একর। কেউ নার্সারি করতে এগিয়ে এলে কৃষি বিভাগ তাকে সার্বিক সহযোগিতা করতে সব সময় প্রস্তুত।