দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গায় দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে রমরমা সুদের ব্যবসা : নিtস্ব হচ্ছে হতদরিদ্র পরিবার

 

ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি: দামুড়হুদার উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা গ্রামে চলছে রমরমা সুদের ব্যবসা। দিন দিন এ ব্যবসা সম্প্রসারিত হচ্ছে। আর মহাজনদের খপ্পরে পড়ে চড়া সুদে টাকা নিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এলাকার একশ্রেণির উঠতি প্রভাবশালী ব্যক্তিগতভাবে বা নিজেদের সৃষ্ট কোনো সংস্থার নাম করে দীর্ঘদিন ধরে এ ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে।

দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গায় ২০-২২ জন সুদখোর মহাজন রয়েছে। এদের মধ্যে অনেকেই এলাকার প্রভাবশালী কেউ ব্যবসায়ী বা চাকরিজীবী। ১ লাখ টাকায় তারা প্রতি সপ্তাহে ১০ হাজার টাকা মাসে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত সুদ আদায় করে।  আসল ১ লাখ টাকা বাদে বছরে ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা সুদ গুনতে হয়।  এই মহাজনদের প্রতিজনের প্রায় ৫০ হাজার থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত খাটানো রয়েছে। নিম্ন আয়ের বিভিন্ন পেশার লোকজন সুদখোরদের গ্রাহক হলেও তাদের সবার লক্ষ্য থাকে শিক্ষক ও ব্যবসায়ীদের গ্রাহক করার। সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন জমা হয় ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাব নম্বরে। তাই শিক্ষকদের টাকা দিয়ে স্বাক্ষরসহ চেক বই নিয়ে যায় মহাজনেরা। দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা এলাকায় সরকারি-বেসরকারি অনেক শিক্ষক রয়েছেন যারা নিজেরা কখনো বেতন তুলে দেখেননি। মহাজনেরাই বেতনভাতা তুলে লভ্যাংশ রেখে অবশিষ্ট টাকা তুলে দেয় শিক্ষকের হাতে। অনেক শিক্ষকই রয়েছেন যারা ১৫ বছর আগে এ প্রক্রিয়ায় চেক বন্ধক রেখেছেন। তারা অদ্যাবধি সুদ দিয়ে যাচ্ছেন কিন্তু আসল শেষ করতে পারছেন না। অনেকের পুরো বেতন চলে যায় সুদ দিয়েই। এতে তারা আরও বেশি ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নজির আহম্মেদ জনান, তিনি সুদের জালে বন্দী থেকেই পেনশনে গেছেন। কৃষক সালাউদ্দিন বলেন, ধান রোপণের সময় কৃষকদের হাতে টাকা থাকে না। বারবার ফসলহানিতে শতকরা ৮০ জন কৃষকই ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। এ সময় প্রকৃত কৃষকদের সহজে কৃষিঋণ দেয়া হলে, মাঠে রেখেই মহাজনদের ধান দিতে হবে না। ফলে কমে আসবে এ সুদের ব্যবসা। কার্পাসডাঙ্গা পরিষদের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান ভুট্ট বলেন, কৃষকসহ গ্রামের বেকার যুবক-যুবতীদের সহজ শর্তে ঋণ প্রদান এবং তাদের কারিগরি প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রশিক্ষিত করতে পারলে এ ধরনের মহাজনি সুদের ব্যবসা বন্ধ হবে।