দক্ষিণ এশীয় বিদ্যুত গ্রিড অগ্রাধিকার : ফারুক

স্টাফ রিপোর্টার: দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে একটি অভিন্ন বিদ্যুত সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারে রয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারতের নতুন ধরনের ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহ। এ অঞ্চলে উৎপাদক ও আমদানিকারক দেশগুলোর মধ্যে অভিন্ন এ বিদ্যুত গ্রিড চালু হলে বাংলাদেশ ব্যাপকভাবে লাভবান হবে বলে মনে করেন তিনি। সম্প্রতি ঢাকা সফরের সময় এক সাক্ষাৎকার দেন পাঁচ দফায় জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকারী ফারুক আবদুল্লাহ।
তিনি বলেন, আঞ্চলিক বিদ্যুত গ্রিড গড়ে উঠলে বাংলাদেশ আরো বিদ্যুত আমদানি করতে পারবে। কারণ তখন ভারত ছাড়াও ভুটান ও নেপাল থেকে বিদ্যুত আনতে পারবে বাংলাদেশ। আমি জানি না কতো তাড়াতাড়ি এটা করা সম্ভব, তবে আমরা আশা করি, যতো দ্রুত সম্ভব আঞ্চলিক এ বিদ্যুত গ্রিড গড়ে উঠবে। আমরা মনে করি এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিদ্যুত আমাদের যেমন দরকার তেমনি আপনাদেরও জরুরি। ভারতীয় মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন ভারত থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত পেতে পারে। আড়াইশ মেগাওয়াট সরকারি ও আড়াইশ মেগাওয়াট বেসরকারি খাত থেকে। কিন্তু ২০১৪ সাল নাগাদ তা সহজেই এক হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করা যাবে। আপনাদের যে লাইন আছে তাতে সহজেই এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত চলাচল করতে পারে। আমি মনে করি এটা খুবই ভালো দিক। এরপর ভারত, ভুটান ও নেপালের মধ্যে আলোচনা আরো এগোলে আপনারা ভবিষ্যতে আরো অনেক বেশি বিদ্যুত পাবেন। কারণ এসব দেশে অনেক প্রকল্প আসছে।
 আবদুল্লাহ বলেন, ত্রিপুরার পালটানা বিদ্যুত কেন্দ্র থেকে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত দেয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে ভারী যন্ত্রপাতি পরিবহনের সুযোগ পাওয়ায় ওই বিদ্যুত কেন্দ্র গড়ে তোলা সম্ভব হয়। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বলেছেন, ওই বিদ্যুত কেন্দ্র থেকে নিজেদের ভাগের ১০০ মেগাওয়াট বাংলাদেশকে দিতে চায় তার সরকার। এটা কঠিন হবে না। আমরা আপনাদের এখান (বহরমপুর-ভেড়ামারা) দিয়ে এতো বিদ্যুত দিতে পারলে ত্রিপুরা থেকেও ১০০ মেগাওয়াট দিতে পারবো, বলেন আবদুল্লাহ।
ভারতীয় মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে ভারতের পূর্বাঞ্চল ও মিয়ানমারের মধ্যে গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্প আবার শুরু করতে চায় তার সরকার। মিয়ানমারের গ্যাস আছে এবং আমাদের তার চাহিদা রয়েছে। কিন্তু এটার মধ্য দিয়েও বাংলাদেশ উপকৃত হবে। কারণ ভবিষ্যতে আপনাদেরও মিয়ানমারের গ্যাস দরকার হতে পারে। এ বিষয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে আবারো আলোচনা শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি। তবে বিষয়টি জ্বালানি (পেট্রোলিয়াম) মন্ত্রণালয় দেখভাল করায় এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে পারেননি তিনি।              আবদুল্লাহ বলেন, আশা করি আফগানিস্তানের মতো মিয়ানমারকেও সার্কে আনা যাবে। সেটা একটি বড় ধরনের অগ্রগতি হবে। বিষয়টি ইতিবাচকভাবে নিতে আমরা বাংলাদেশের কাছে প্রস্তাব রেখেছি। ফারুক আবদুল্লাহ মনে করেন, এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশের স্বার্থের প্রতি যত্নশীল হওয়ার একটি বড় দায়িত্ব রয়েছে ভারতের। সার্কভুক্ত দেশগুলোর আন্তঃসম্পর্ক ও সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে ভারত অঙ্গীকারাবদ্ধ, যাতে আমরা অন্ধকার পেরিয়ে আলোয় উঠে আসতে পারি।