তুরস্কে ১২ বছরের আত্মঘাতী শিশু কেড়ে নিলো ৫১টি প্রাণ

 

মাথাভাঙ্গা মনিটর: তুরস্কে একটি কুর্দি পরিবারের বিয়ের অনুষ্ঠানে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৫১ জন নিহত হয়েছেন। দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান জানিয়েছেন, ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সী একটি শিশু এই হামলা চালায়। অতিথিরা রাস্তা দিয়ে নাচতে নাচতে বিয়ের অনুষ্ঠানে আসার সময় ভিড়ের ভেতর নিজেকে উড়িয়ে দেয় হামলাকারী। এর ইসলামিক স্টেটকে (আইএস) দায়ী করেছেন এরদোয়ান। সিরিয়ার সীমান্তবর্তী গাজিয়ানতেপ শহরে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় আরও ৬৯ জন আহত হয়েছেন যার মধ্যে ১৭ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। শহরটিতে আইএসের তৎপরতা রয়েছে। সিরিয়ায় চলমান সঙ্কটের কারণে শহরটির ১৫ লাখ মানুষ অনেকদিন থেকেই বিপদের মধ্যে আছেন। সিরিয়ায় আইসের সাথে লড়াই করছে কুর্দিরা যোদ্ধারা। গত মে মাসে ওই শহরটিতে আত্মঘাতী হামলায় দুইজন পুলিশ নিহত হয়েছিলো। ধারণা করা হয় ওই হামলার পেছনে আইএস ছিলো। স্থানীয় সরকার বিভাগের এক বিবৃতিকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স বলেছে, বোমা হামলায় ৫১ জন মারা গেছেন। আরও অনেকে আহত হয়েছেন, যাদের প্রদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ঘটনাটিকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে অভিহিত করে একজন আত্মঘাতী হামলাকারী বোমাটির বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে বলে ধারণা প্রকাশ করেছে তুর্কি সরকার। তুরস্কের উপ-প্রধানমন্ত্রী মেহমেত সিমেস্ক হামলাটিকে ‘বর্বরোচিত’ অভিহিত করে বলেছেন, ‘খোদার ইচ্ছায় আমরা এ ধাক্কা কাটিয়ে উঠব।’ শহরের যে অংশে বিস্ফোরণটি ঘটানো হয়েছে সেখানে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বসবাস করেন। লোকজন বিয়ের আসর থেকে রাস্তায় বেরিয়ে আসার পরই বিস্ফোরণটি ঘটনো হয়। সিরীয় সীমান্ত থেকে ৬৪ কিলোমিটার দূরের শহরটি সব অংশ থেকে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। ঘটনাস্থলে অনেকগুলো অ্যা‌ম্বুলেন্স জড়ো হয়েছে এবং সিএনএন তুর্কিতে সম্প্রচারিত ভিডিও ফুটেজে শহরটির জনাকীর্ণ রাস্তাটিতে পুলিশ ও জরুরি বিভাগের কর্মীরা উপস্থিত হয়েছেন বলে দেখা গেছে। নিরাপত্তা সূত্রগুলো জানিয়েছে, সম্ভবত উৎসব করতে বিয়ের আসর থেকে বড় একটি দল রাস্তায় নেমে আসার পর বিস্ফোরণটি ঘটানো হয়।  টুইটারে তুরস্কের ক্ষমতাসীন একে পার্টির পার্লামেন্ট সদস্য সামিল তাইয়ার জানিয়েছেন, হামলার পেছনে আইএস আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কুর্দি নেতৃত্বাধীন পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির গাজিয়ানতেপ আসনের পার্লামেন্ট সদস্য মাহমুত তোগরুল বিয়ের অনুষ্ঠানটি কুর্দি পরিবারের বলে রয়টার্সকে জানিয়েছেন। এর আগে কুর্দিদের বিভিন্ন সমাবেশে আত্মঘাতী বোমা হামলার জন্য আইএসকে দায়ী করা হয়েছিলো। দেশের ভিতরে ও সীমান্ত পেরিয়ে প্রতিবেশী সিরিয়া থেকে আইএস জঙ্গিদের চালানো হামলার কারণে নিরাপত্তা হুমকির মুখে আছে তুরস্ক, পাশাপাশি নিষিদ্ধ ঘোষিত কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টিও (পিকেকে) অভ্যান্তরীণ হুমকি হিসেবে বিরাজ করছে। গতমাসে তুর্কি সামরিক বাহিনীর একটি দলছুট অংশ সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এরপর থেকে দেশটিতে ব্যাপক দমনাভিযান শুরু করেছে প্রধানমন্ত্রী রিজেপ তায়িপ এরদোয়ান সরকার। সেনা বাহিনীর দুর্বলতার সুযোগে বিচ্ছিন্নতাবাদী পিকেকেও তাদের তৎপরতা তীব্রতর করে তুলেছে। এরই মধ্যে এ বোমা হামলার ঘটনা ঘটলো।