ডাকবাংলায় র‌্যাবের হাতে অস্ত্র ও গুলিসহ আটক আশানুর চিহ্নিত অপরাধী

 

আন্দুলবাড়িয়া প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের ডাকবাংলায় র‌্যাবের হাতে অস্ত্র ও গুলিসহ আটক জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়িয়ার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের আশানুর রহমান এলাকার একজন চিহ্নিত অপরাধী। সে গ্রামের সনু খাঁর ছেলে। তার পিতা একজন ভিক্ষুক।

গ্রামবাসী তাকে আটক করার খবর পেয়ে র‌্যাবকে সাধুবাদ জানিয়ে তার সম্পর্কে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন জনপ্রতিনিধি তথ্য দিতে গিয়ে বলছেন, আশানুর দীর্ঘদিন যাবত চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, রাহাজানি, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধের সাথে জড়িত রয়েছে। ঘটনার শিকার ভুক্তভোগীরা তার ভয়ে মুখ খুলতে এতোদিন সাহস পায়নি। তার আটক হওয়ার সংবাদ গতকাল বৃহস্পতিবার দৈনিক মাথাভাঙ্গায় প্রকাশিত হলে তার অপরাধ কর্মকাÐ সম্পর্কে এলাকায় আলোচিত হয়ে ওঠে।

সূত্র জানায়, গত কয়েক বছর পূর্বে নিশ্চিন্তপুর হালদারপাড়ায় গভীর রাতে আনন্দ হালদার, শ্যামপদ হালদার, আশাদুল হক, আব্দুল মালেক ও মজিবর রহমানের বাড়িতে ডাকাতি সংঘটিত হয়। ডাকাতদল গভীর রাতে গৃহে প্রবেশ করে পরিবারের সদস্যদের দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ টাকা, স্বর্ণাংলকার লুট করে নেয়। জনশ্রæতি ওঠে ওই ডাকাতদল বাড়ির নারী সদস্যদের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। ডাকাতির শিকার আতঙ্কিত কয়েকটি পরিবার নিরাপত্তার অভাবে বাড়িঘর ভেঙে নিয়ে জনবসতির মধ্যে বাপ, দাদার পুরোনো ভিটায় ফিরে যান। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে কয়েকজনের নিকট হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজি করারও অভিযোগ রয়েছে। সে সময় হুমকি ও ভয়ভীতির কারণে চাঁদাবাজির ঘটনায় অনেকে মুখ খোলেনি। সন্ত্রাসী আশানুর রহমান বাড়ির সামনে মুদি দোকান দিয়ে মাঝে মাঝে নিরুদ্দেশ হয়ে যেতো। সে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার রায়সা গ্রামের পেশাদার অপরাধী আশাদুল ইসলাম আশার সাথে আন্তঃবিভাগীয় অপরাধ সিন্ডিকেট গড়ে তুলে দেশের বিভিন্নস্থানে অপরাধ সংঘটিত করে আসছিলো। এ সিন্ডিকেট চক্রের আন্দুলবাড়িয়া এলাকায় আরও কয়েকজন সদস্য রয়েছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। আটককৃতদের পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদ করলে এসব অপরাধীদের সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যাবে বলে আলোচনা ও সমালোচনার সূত্র থেকে জানা গেছে।

সূত্র আরও জানায়, পেশাদার অপরাধী আশাদুল ইসলাম আশার রয়েছে আলমডাঙ্গার রায়সা ও যশোর শহরে বিলাস বহুল বাড়ি। এ বাড়িতে বসে এলাকার অপরাধীদের নিয়ে পরিকল্পনা ও বৈঠক করা হয়। এ চক্রের সদস্যদের টার্গেট সোনার দোকান, বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বড় ব্যবসায়ীর বাড়ি, জনবহুল সড়ক ও চাঁদাবাজি। এ সিন্ডিকেট দলের সদস্যরা বৈঠক করে প্রথমে টার্গেট করার পর তারা দিনের বেলায় কয়েকদিন ঘটনাস্থল রেকি করে গভীর রাতে নির্বিঘেœ নানা অপরাধ সংঘটিত করে আসছিলো। সূত মতে গত কয়েক বছর পূর্বে এ অপরাধ চক্রটি ঝিনাইদহের হরিণাকুÐু বাজারে একটি সোনার দোকান ভেঙে ডাকাতি করছিলো। বাজারের নৈশপ্রহরীরা টের পেয়ে স্থানীয় জনতার সহযোগিতায় ঘরের মধ্যে একজনকে আটক করে। সঙ্গীয় অন্যরা পালিয়ে যায়। আটককৃত ব্যক্তি উপস্থিত জনতার গণপিটুনিতে ঘটনাস্থলে নিহত হন। তার বাড়ি আন্দুলবাড়িয়ার কুলতলার হঠাৎপাড়ায় বলে জানা গেছে। এ চক্রটি চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা ও বরিশাল এলাকায় অপরাধ সংঘটিত করার নেটওর্য়াক রয়েছে বলে জানা গেছে। র‌্যাব গোপন সূত্রে তথ্য পেয়ে গত বুধবার তাদের ঝিনাইদহের ডাকবাংলার নাথকুÐ গ্রাম থেকে অস্ত্র ও গুলিসহ আটক করে। জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, নিশ্চিন্তপুরের সনু খাঁর ছেলে আটককৃত আশানুরের বিরুদ্ধে জীবননগর থানার অপরাধ তালিকায় তার নামে কোনো মামলা নেই।