টানা অবরোধে ক্ষতিগ্রস্ত ঝিনাইদহের সবজি চাষিরা

শাহনেওয়াজ খান সুমন: টানা অবরোধের কারণে ঝিনাইদহের ৬টি উপজেলার সবজি চাষিরা বিপাকে পড়েছেন। তারা উৎপাদিত সবজি বাজারে নিয়ে গিয়ে পাইকার ব্যবসায়ী না থাকায় এবং সঠিক দাম না পাওয়ায় লোকসানের শিকার হচ্ছেন। অনেক কৃষক সবজির মূল্য না পেয়ে ক্ষেত থেকে সবজি না তুলে নষ্ট করে দিচ্ছেন। পাইকার ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, তারা পরিবহন না পাওয়ায় সবজি ক্রয় করে পাঠাতে পারছেন না।

সরেজমিনে জেলার সবজি উৎপাদনের এলাকা হিসেবে পরিচিত কালীগঞ্জের বারোবাজার ও মহেশপুরের খালিশপুর বাজার এলাকা ঘুরে এবং কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, টানা অবরোধের কারণে কৃষকেরা জমিতে উৎপাদিত বাঁধাকপি, মূলা, বেগুন, পাতাকপি, কাঁচা মরিচ বাজারে নিয়ে গিয়ে কাঙ্ক্ষিত দাম পাচ্ছেন না। অবরোধের কারণে বেগুন ৩/৪ টাকা, মূলা ২ টাকা, পাতাকপি ১ টাকা, বাঁধাকপি ৪/৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। অনেক কৃষক সবজির মূল্য না পাওয়ায় বাজারে তুলছেন না।

বারোবাজার এলাকার কৃষক জয়নাল হোসেন জানান, তিনি এবার প্রায় ৩ বিঘা জমিতে বেগুন ও বাঁধাকপি চাষ করেছেন। অবরোধের আগে তিনি বেগুনের বেশ ভালোই দাম পেয়েছিলেন। কিন্তু এখন বেগুন বাজারে আনলে কেনার লোক নেই। লাভ তো দূরের কথা অনেক ক্ষেত্রে বাজারে পণ্য নিয়ে যাওয়ার ভ্যান ভাড়াও উঠছে না। কৃষক আনোয়ার জানান, তিনি বাঁধাকপি ও মূলা এনেছেন এক ভ্যান। কিন্তু কোনো পাইকার তার সবজি কিনছেন না। বাধ্য হয়েই স্থানীয় খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

মহেশপুরের খালিশপুর গ্রামের কৃষক আয়ুব হোসেন জানান, তাদের উৎপাদিত সবজি অবরোধের কারণে বিক্রি করতে পারছেন না। তিনি জানান, এ এলাকায় যদি সবজি রাখার জন্য হিমাগার থাকতো তাহলে তাদের সবজিগুলো কম দামে বিক্রি করতে হতো না। তাদের উৎপাদিত সবজিগুলো সেখানে রাখতে পারতেন। কৃষকের কথা কেউ ভাবে না। রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মুখ থেকে বলতে শোনা যায়, কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। আসলে তারা নিজেদের নিয়ে কথাই ভাবে। পাইকারি ব্যবসায়ী মনির হোসেন জানান, এলাকার বাজারে অনেক সবজি ওঠে। কিন্তু তারা পরিবহন না পাওয়ায় কারণে বেশি পরিমাণের সবজি কিনতে পারছেন না। যতোটুকু পারছেন তা ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে পাঠাতে পরিবহন খরচ বেশি পড়ছে।