ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের তৈরি সাঁকোয় চলছে পারাপার

দামুড়হুদা কালিয়াবকরি ভৈরব নদীর পর আজও নির্মাণ হয়নি ব্রিজ : জনদর্ভোগ

 

বখতিয়ার হোসেন বকুল/জহির রায়হান: দামুড়হুদা কালিয়াবকরির ভৈরব নদীর ওপর আজও নির্মাণ করা হয়নি ব্রিজ। দামুড়হুদা ও মুজিবনগর উপজেলা শহরের সাথে যোগাযোগের একমাত্র সেতুবন্ধন ওই ভৈরব নদীর ওপর ব্রিজ নির্মাণ না হওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের তৈরি সাঁকো দিয়েই চলছে পারাপার। ফলে প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা। বাড়ছে জনদুর্ভোগ। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছে ওই এলাকার স্কুলগামী কোমলমতি ছেলেমেয়েরা। এলাকার মানুষের নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় নিয়ে কালিয়াবকরির ভৈরব নদীর ওপর অচিরেই একটি ব্রিজ নির্মাণের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের লক্ষ্যে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজগার টগরের নিকট জোর দাবি জানিয়েছে এলাকার ভুক্তভোগী জানসাধারণ।

ভুক্তভোগী এলাকাবাসী জানায়, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার নতিপোতা ইউনিয়নের কালিয়াবকরি ও দুলালনগর গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে ভৈরব নদী। স্বাধীনতার পূর্ববর্তী সময় থেকেই কালিয়াবকরি-দুলালনগর গ্রামের মধ্যদিয়ে ছিলো মেহেরপুর জেলা শহরে যাতায়াতের অন্যতম যোগাযোগ সড়ক। পরবর্তীতে ওই কাঁচা সড়কটি পাকাকরণ করা হয়। সড়কটি দুলালনগর হয়ে মহাজনপুর, কোমরপুর ও রায়পুরের মধ্যদিয়ে মেহেরপুর শহরের প্রধান সড়কের সাথে মিশে গেছে। সময় সাশ্রয়ের লক্ষ্যে এলাকার মানুষ ওই সড়ক দিয়েই বেশি যাতায়াত করে। কিন্ত কালিয়াবকরি ঘাট এলাকায় ব্রিজ নির্মাণ না হওয়ায় দীর্ঘদিন থেকেই বাঁশের তৈরি সাঁকোয় পার হতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। ওই বাঁশের তৈরি সাঁকো দিয়ে বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল, রিকশা-ভ্যান পার করতে গিয়ে প্রতিদিনি ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। বাড়ছে জনদুর্ভোগ। স্থানীয়রা আরো জানায়, দুলালনগর গ্রামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পার্শ্ববর্তী চারুলিয়া গ্রামে রয়েছে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। কালিয়াবকরিসহ পার্শ্ববর্তী গ্রামের ছাত্রছাত্রীরা ওই বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে।

চারুলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হারুন-অর রশিদ জানান, ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের তৈরি সাঁকোয় শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার হয়ে বিদ্যালয়ে আসে। ফলে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। আর বর্ষার সময়তো শিক্ষার্থীরা স্কুলেই আসতে পারে না। এতে একদিকে যেমন ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার মান অপরদিকে বিনষ্ট হচ্ছে শিক্ষার পরিবেশ।

কালিয়াবকরি গ্রামের কৃষক ফারুক হোসেন জানান, আমাদের দুলালনগর ও চারুলিয়া মাঠে জমি রয়েছে। চাষাবাদের জন্য প্রতিদিনই ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের তৈরি সাঁকোয় পার হয়ে যেতে হয় ওই মাঠে। যখন ফসল কেটে বাড়ি আনার সময় হয় তখন সবচেয়ে বেশি সমস্যা দেখা দেয়। ফসল বাড়ি আনতে পড়তে হয় চরম দুর্ভোগের মধ্যে।

দুলালনগর ক্যাম্প ইনচার্জ শ্রী অরবিন্দু পোদ্দার জানান, নতিপোতা ইউনিয়ন চুয়াডাঙ্গা জেলার একটি সন্ত্রাস কবলিত এলাকা। ভৈরব নদীর ওপর ব্রিজ না থাকায় দুলালনগরসহ আশেপাশের গ্রামে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের যাতায়াত করতে খুবই সমস্যা হয়। কালিয়াবকরি ভৈরব নদীর ওপর ব্রিজ নির্মাণ হলে দ্রুত ওই এলাকায় পৌঁছানো সহজ হবে। এলাকার মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থেই ওই ভৈরব নদীর ওপর একটি ব্রিজ নির্মাণ খুবই জরুরি। এলাকার মানুষের নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় নিয়ে কালিয়াবকরি ভৈরব নদীর ওপর অচিরেই একটি ব্রিজ নির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজগার টগরের নিকট জোর দাবি জানিয়েছে এলাকার ভুক্তভোগী জানসাধারণ।