ঝিনাইদহে হোমিও চিকিৎসক হত্যা : দুই যুবকের রিমান্ড

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের কালুহাটি গ্রামের বেলেখাল বাজারে হোমিও চিকিৎসক সমির উদ্দীন বিশ্বাস হত্যার ঘটনায় দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার ভোরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। এদেরকে দুদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, ঝিনাইদহ নেভল পলিটেকনিকের প্রথম বর্ষের ছাত্র শফিকুল ইসলাম কাজল (১৭) ঝিনাইদহ সদর উপজেলার রামনগর গ্রামের তাইজাল হোসেনের ছেলে। অন্যদিকে কাপড় ব্যাবসায়ী মিলন মিয়া (২৫) একই উপজেলার গান্না ইউনিয়নের নারায়নপুর গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে। এদিকে গতকাল সোমবার বিকালে কাজল ও মিলনকে আদাতলকে সোপর্দ করে তদন্ত কর্মকর্তা উজ্জল মৈত্র ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালাত দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসান হাফিজুর রহমান দু যুবকের গ্রেফতারের কথা স্বীকার করে জানান, পুলিশ সমির হত্যার রহস্য ও ক্লু উদ্ধারে গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
জানা গেছে, ঝিনাইদহ নেভল পলিটেকনিকের প্রথম বর্ষের ছাত্র শফিকুল ইসলাম কাজল সদরের কনেজপুর একটি মসজিদের ইমামতি করেন। তার সাথে গান্না ইউনিয়ন শিবিরের সম্পর্ক রয়েছে। মোবাইলের কললিষ্ট যাচাই করেও পুলিশ সে রকম তথ্য পেয়েছে। অন্যদিকে নারায়নপুর গ্রামের মিলন মিয়া গান্না বাজারের জোয়ারদার মার্কেটে কাপড়ের ব্যবসা করেন। মিলন মিয়ার সাথে শিবিরের ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করেন পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত ৭ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকালে বুকে ছুরি মেরে হোমিও চিকিৎসক সমির উদ্দীনকে দুর্বৃত্তরা খুন করে। সমির নিহত হওয়ার পর মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আইএস দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয়। এ ঘটনায় দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়। নড়ে চড়ে বসে দেশের গোয়েন্দা বিভাগগুলো। গুরুত্ব বিবেচনা করে সমির হত্যার রহস্য উদঘাটনে দেশের বেশ কয়েটি গোয়েন্দা বিভাগ কাজ করছে বলে জানা গেছে। ওই গ্রামের কারো কারো মতে খ্রিস্টান হওয়ার পর সমির আবারো ইসলাম ধর্মে ফিরে আসে। তবে নিহত সমিরের লাশ চেয়ে পুলিশের কাছে ফোন করে লাইফ ওয়ে নামের একটি খ্রিস্টান ধর্মের সংগঠন। পুলিশ তাদের দাবি নাকচ করে দিয়ে লাশ ময়নাতদন্ত শেষে গত শুক্রবার বিকালে পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করে। পরে পরিবার সমিরের লাশ কালুহাটি নিজ গ্রামে ইসলাম ধর্মের রীতি অনুয়ায়ী জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করে। তবে এলাকার কোনো মওলানা তার জানাজা পাড়াতে রাজি হয়নি।