ঝিনাইদহে পুলিশের তেলেসমাতি-আমি কি ৫শ টাকার দারোগা?

 

ঝিনাইদহে হত্যা মামলার আসামিকে গ্রেফতারের পর টাকা না পেয়ে নির্যাতন

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের শৈলকুপায় এক হত্যা মামলার পলাতক আসামি সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতারের পর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে তমালতলা পুলিশ ক্যাম্পের এএসআই সোহেলের বিরুদ্ধে।

সাইফুলের ছেলে সবুজের অভিযোগে জানা গেছে, মঙ্গলবার গভীর রাতে দিগনগর ইউনিয়নের অচিন্তপুর গ্রাম থেকে হত্যা মামলার পলাতক আসামি সাইফুলকে গ্রেফতার করে তমালতলা পুলিশ ক্যাম্পের এএসআই সোহেল। সবুজের ভাষ্যমতে মার বাঁচাতে এসআই সোহেল টাকা দাবি করেন তাদের কাছে। এএসআই সোহেল আসামির স্বজনদের শাসিয়ে বলেন ভোরবেলা টাকা নিয়ে ক্যাম্পে না আসলে বুঝিয়ে দেবে দারোগা সোহেল কি জিনিস। টাকা দিতে ব্যর্থ হলে এএসআই সোহেল তার পিতাকে মারপিট করে শীতের মধ্যে খালি গায়ে বসিয়ে রাখেন। গতকাল বুধবার দুপুরে আসামি সাইফুলকে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।

শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. রাকিবুদ্দীন রনি আসামি সাইফুলকে হাসপাতালে আনার কথা স্বীকার করে জানান, বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শৈলকুপার অচিন্তপুর গ্রামের মৃত উকিল শেখের ছেলে সাইফুলকে পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে আসে। তিনি বুকে ব্যাথা অনুভব করছিলেন। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর আবার নিয়ে যাওয়া হয়।

আসামির ছোট ভাই আশরাফুল ইসলাম অভিযোগ করেন, এএসআই সোহেল ভোরে টাকা নিয়ে ক্যাম্পে দেখা করতে বলেন। তিনি ক্যাম্পে পৌঁছানোর আগেই তার ভাইকে মারপিট করে। আসামি সাইফুলের আরেক স্বজন অচিন্তপুর গ্রামের আজিজার লস্কার জানান, তমালতলা ক্যাম্প থেকে আসামি সাইফুলকে শৈলকুপা থানায় পাঠানোর গাড়ি ভাড়া বাবদ ৫শ টাকা দেয়া হয়। এরপর আসামিকে থানায় আনা হলে পরিবারের লোকজন দেখতে আসে। এ সময় এএসআই সোহেল থানায় এসে তাদেরকে বলেন, আমি কি ৫শ’ টাকার দারোগা?

বিষয়টি নিয়ে তমালতলা ক্যাম্পের এএসআই সোহেল জানান, আসামিকে মারধর করা হয়নি। তাকে ধরে এনে শীতের মধ্যে বসিয়ে রাখা হয়েছিলো মাত্র। আসামির পরিবারের কাছে টাকা চাওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন। শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, ২০১০ সালে অচিন্তপুরে গ্রাম্য সংঘর্ষে রোজদার আলী নামে একজন নিহত হয়। সেই হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভূক্ত আসামি ছিলেন সাইফুল। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর মঙ্গলবার রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে মারধর ও পরিবারের কাছে টাকা দাবির বিষয়টি জানা নেই বলে ওসি জানান।