ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ : প্রশাসনের তদন্ত শুরু

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: দুর্নীতির দায়ে ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়নের বরখাস্তকৃত চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের মাস্টারের বিরুদ্ধে ব্যাপক অর্থ আত্মসাতের তথ্য বেরিয়ে আসছে। সরকারিভাবে তদন্তে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ৩৭ হাজার ৫শ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হলেও বহু অপকর্মের তথ্য অজানা রয়ে গেছে। এরমধ্যে হাট ইজারা ও ওয়ান পার্সেন্টের টাকার পরিমাণ বেশি বলে জানা গেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে চেয়াম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে তদন্তে যান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শেখ রফিকুল ইসলাম। তিনি ইউনিয়ন পরিষদের সকল মেম্বার ও এলাকাবাসীর বক্তব্য শোনেন। এদিকে এ চেয়ারম্যানকে রক্ষায় উঠেপড়ে লেগেছে একটি মহল।

হরিণাকুণ্ডু সোনালী ব্যাংকসূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ৭৩ হাজার টাকা, একই বছরের ১১ অক্টোবর এক লাখ ৭ হাজার টাকা, ২০১২ সালের ২৯ মার্চ ৯৫ হাজার টাকা, একই বছরের ১৩ আগস্ট এক লাখ ৪৪ হাজার টাকা, ১৮ জুলাই ২১ হাজার টাকা ও ১৮ আগস্ট ৮৫ হাজার ৬৭০ টাকাসহ মোট ৯টি চেকে ৭ লাখ ৬৭ হাজার ৩০০ টাকা ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে উত্তোলন করেছেন। বর্তমান ইউপি মেম্বাররা অভিযোগ করেন, এলজিএসপির ২২টি প্রকল্প দেখিয়ে মাত্র ১০টি বাস্তবায়ন করেছেন চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের। বাকি ১২টির টাকা পকেটস্থ করেন। হাটবাজারের টাকা তুলে ৮টি প্রকল্প দেখিয়ে একটিও বাস্তবায়ন করেননি। ৬৫ হাজার টাকা মূল্যের একটি ল্যাপটপ আত্মসাৎ করেছেন। বরাদ্দকৃত ২২টি টিউবওয়েলের অর্ধেকই দেননি। সাঁকো নির্মাণের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে ২৬ হাজার টাকা ব্যয় দেখালেও গ্রামবাসী বাঁশ কাঠ দিয়ে নিজেরাই সাঁকো মেরামত করেছেন। মসজিদ মাদরাসার টাকা পর্যন্ত চেয়ারম্যান কাদেরের হাত থেকে রেহায় পায়নি। এ চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের প্রভাবশালীদের ধরে এখন স্বপদে বহাল থাকার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ। বরখাস্তকৃত চেয়ারম্যানের দুর্নীতির বিষয়টি নিয়ে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান বলেন, টাকা উত্তোলনের সাথে ব্যয়ের কোনো মিল পাইনি। তাছাড়া যে সব প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে বলে কাগজ-কলমে দেখানো হচ্ছে বাস্তবে তারও কোনো অস্তিত্ব নেই।

প্রসঙ্গত, সরকারি টাকা আত্মসাৎসহ নানাবিধ দুর্নীতির দায়ে গত ৩০ জুন রোববার সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয় রঘুনাথপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের মাস্টারকে।

এদিকে এলাকাবাসী জানান, আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে আব্দুল কাদের মাস্টার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর বেপরোয়াভাবে সরকারি অর্থ লোপাট করতে থাকেন। রাস্তার ধারে সরকারি গাছ বিক্রি থেকে শুরু করে এমন কোনো কাজ নেই যা তিনি করেননি। টিআর, এলজিএসপি, কাবিখা ও কর্মসৃজনের টাকা তিনি কাউকে ভাগ না দিয়ে একাই পকেটস্থ করতেন বলে মেম্বাররা অভিযোগ করেন।