ঝিনাইদহের বাজার গোপালপুরে তিন সন্তানের জনক নিখোঁজের ৪ দিন পর ভুট্টাক্ষেতে মিললো লাশ!

 

বাজারগোপালপুর প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের বাজারগোপালপুরের একটি ভুট্টাক্ষেত থেকে তিন সন্তানের জনক শরিফুল ইসলাম (৪০) নামের এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার সকালে খবর পেয়ে স্থানীয় বাজারগোপালপুর পুলিশ ক্যাম্পে খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়ে লাশ হেফাজতে নেয়। নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, গত বৃহস্পতিবার সকালে শরিফুল বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। নিকট আত্মীয়দের সাথে যোগাযোগ করেও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। অবশেষে গতকাল মঙ্গলবার সকালে কৃষকরা গ্রামের মাঠে একটি ভুট্টাক্ষেতে লাশ পড়ে থাকতে দেখে চমকে ওঠেন। খবর পেয়ে নিখোঁজ শরিফুলের পরিবারের লোকজন ছুটে যান মাঠে। তারা লাশটি শরিফুলের বলে নিশ্চিত করেন। নিহতের পরিবারের দাবি শরিফুল পরিবারিক কলহের কারণে বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। ঝিনাইদহ সদর থানার তদন্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। হত্যার কোনো আলামত না পাওয়ায় এবং পরিবারের দাবির প্রেক্ষিতে ময়না ছাড়াই দাফন করা হয়েছে।

পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মধুহাটি ইউনিয়নের বাজারগোপালপুর গ্রামের ঘাট পাড়ার আলফাজ উদ্দিনের ছেলে শরিফুল ইসলাম বেকারির বিস্কুট, পাউরুটি ব্যবসায়ী ছিলেন। বছর পাঁচেক আগে শরিফুল আধ্যাত্মিক সাধনের নামে হাজরা গ্রামের মোজামের নিকট দিক্ষা নিতে থাকেন। শুরু হয় সংসার বৈরাগি। সংসারের স্ত্রী সন্তানদের দেখ ভালের প্রতি আসে অনীহা। একই সাথে তিনি বিভিন্ন নেশার সাথে জড়িয়ে পড়েন। নেশার টাকায় আর সংঘে ব্যবসায় দেউলিয়া হন তিনি। শরিফুলের লাগামহীন চলাফেরা আর উদাসীনতা নিয়ে সংসারে মাঝে মধ্যেই চলতে থাকে কলহ বিবাদ। একপর্যায়ে শরিফুল ইসলাম বাজারের ব্যবসায়ে দেউলিয়া হয়ে ক্ষেতে কাজ আর মাঠে ফসলের জন্য চাষ শুরু করে। এরই মধ্যে শরিফুল মানষিক ভারসাম্য হারান বলে পরিবারের লোকজন দাবি তুলেছে। অবশেষে গত বৃহস্পতিবার সকালে শরিফুল বাড়ি থেকে বের হয়। আর ফিরে আসেনি। নিকট আত্মীয়দের সাথে যোগাযোগ করেও তাকে খুঁজে মেলাতে পারেনি। দীর্ঘ ৪ দিন নিখোঁজের পর গতকাল মঙ্গলবার সকালে কৃষকরা গ্রামের মাঠে একটি ভুট্টাক্ষেতে লাশ পড়ে থাকতে দেখে চমকে ওঠেন। খবর পেয়ে নিখোঁজ শরিফুলের পরিবারের লোকজন ছুটে যান মাঠে। তারা লাশটি শরিফুলের বলে নিশ্চিত করেন। নিহতের পরিবারের দাবি শরিফুল পরিবারিক কলহের কারণে বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। নিহতের পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় এবং প্রাথমিকভাবে হত্যার কোনো আলামত না পাওয়ায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের আবেদনে সাড়া মিলেছে। ফলে গতকালই বাদ আছর জানাজা শেষে পরিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়েছে। এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর থানা তদন্ত কর্মকর্তা (ওসি) হরেন্দ্র নাথ সরকার, শরিফুলের বিষপানে আত্মহত্যার ঘটনা বলে নিশ্চত করেন।