ঝিনাইদহের নাথকুণ্ডু গ্রামের উম্বাদ আলী কীটনাশক বিষ ছিটাতে গিয়ে হারিয়েছিলেন একটি চোখ

 

 

অর্থের অভাবে দীর্ঘ ১০ বছরেও চিকিসা করাতে পারেনি

বাজারগোপারপুর প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের কৃষকদের কীটনাশক বিষ জমিতে বিচক্ষণ ব্যবহারও ছিটানো সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান নেই। ফলে গ্রামের কৃষকরা তাদের ফসলের জমিতে কীটনাশক বিষ ছিটাতে গিয়ে প্রায়ই পেটের পিড়াসহ নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। আবার কেউবা হারিয়েছেন তার মূল্যমান চোখ। তেমনি একজন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নাথকুণ্ড গ্রামের উম্বাত আলী (৪৭)। তিনি সাধুহাটি কৃষিখামারে (বিএডিসি) কীটনাশক বিষ ছিটাতে গিয়ে হারিয়েছেন মূল্যবান একটি চোখ। তিনি অর্থের অভাবে যেমন ভালো চিকিৎসা নিতে পারেননি।তেমনি গত ১০ বছরেও কৃষি খামার থেকে মেলেনি সামান্যতম চিকিৎসার খরচ।

জানা গেছে,ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাগান্না ইউনিয়নের নাথকুণ্ডু গ্রামের উম্বাদ আলী দীর্ঘ ২০ বছর যাবত সাধুহাটি বিএডিসির কৃষিখামারে শ্রমিকের কাজ করতেন। কিন্তু বিগত সরকারের আমলে এ প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক ছাটাই করা হয়। এ ছাটাইয়ে বাদ পড়েন উম্বাত আলী। তিনি বেকার হয়ে পড়েন। কিছু দিন পর তিনি খামারের উপপরিচালক শ্রী আনান্দ দাসের নিকট যান। তিনি তার সংসারের অভাব অনটনের কথা জানান। তিনি তাকে দিন হাজিরাই কাজের ব্যবস্থা করে দেন। তখন চলছে ধানের জমিতে কীটনাশক বিষ ছিটানোর কাজ। তিনি দিন হাজিরায় জমিতে কীটনাশক বিষ ছিটাতে রাজি হলেন। শুরু করলেন জমিতে কীটনাশক ছিটানোর কাজ। একদিন জমিতে বিষ ঠিটাতে গিয়ে অসাবধানতায় তার চোখে ছুটে পড়ে বিষ। ঘটে বিপত্তি। মুহূর্তের মধ্য চোখে জ্বালা শুরু হয়। বাড়িতে ফিরে আসেন উম্বাদ আলী। রাতে যন্ত্রণা বাড়তে থাকে। সকাল হতে না হতেই একটি চোখে আর কিছুই দেখতে পান না তিনি। তিনি ডাক্তারের নিকট গেলেডাক্তার বলেন, যতদ্রুত সম্ভব চোখ উঠিয়ে ফেলতে হবে। চোখটি নষ্ট হয়ে গেছে। যদি এ চোখটি না উঠানো তাহলে অন্য চোখটিও নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তিনি চিন্তাই পড়েন। একদিকে নিজের সংসার চালাতেই অভাবের তাড়নায় হিমশিম খাচ্ছেন। অন্যদিকে চোখের চিকিৎসার জন্য এ টাকা তিনি কোথায় পাবেন। চিকিৎসার খরচ কি দিবেন বিএডিসি কতৃপক্ষ। না কোনো প্রকার সাহায্য সহযোগিতার হাত বাড়াননি তারা।

তিনি আরো জানান, আমার ৩টি সন্তান। রোজগার করার মতো শুধু আমি একা। বিএডিসির উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অনেক বলেছি সাহায্যের জন্য। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। এবিষয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি অফিসার ড.খান মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আমাদের এখানে বিভিন্নপ্রোগ্রামের কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হয়। অতি সাবধানতার সাথে মাস্ক চশমা, ওয়াটার প্রুভ জ্যাকেট পরে কীটনাশক বিষ ছিটালে এ ধরনের সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায়।