জীবননগরের মারুফদহে জনসভায় এমপি আলী আজগার টগর : দেশ আজ বিদ্যুত উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ

জীবননগর ব্যুরো: চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক হাজি আলী আজগার টগর বলেছেন, ২০০৮ সালে যখন আমরা ক্ষমতা নিয়েছিলাম তখন দেশে মাত্র ১ হাজার ৪শ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন হতো। ২৪ ঘণ্টায় বিদ্যুত পেতাম মাত্র ৪ ঘণ্টা। বিদ্যুত থাকতোই না, মাঝে মাঝে আসতো। অথচ মাত্র ৮ বছরে তার আমুল পরিবর্তন হয়েছে। বর্তমানে দেশে ১৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন হচ্ছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর জঙ্গিবাদ, হত্যা ও সন্ত্রাস বন্ধ হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলছে। বাংলার মাটিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলতেই থাকবে। হরতাল ডেকে, মানুষ পুড়িয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করা যাবে না। বিচারের রায় হবে আর এর মাধ্যমে জাতি কলঙ্কমুক্ত হবে। তিনি গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টায় জীবননগর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের মারুফদাহ গ্রামে ৪০৫টি বাড়িতে নতুন বিদ্যুত সংযোগ উদ্বোধনকালে এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।
রায়পুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. তাহাজ্জত হোসেনের সভাপতিত্বে ও মো. মশিউর রহমানের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত জনসভায় তিনি আরও বলেন, যারা আমাদের দেশে গণহত্যা চালিয়েছে, আগুন দিয়ে ঘরবাড়ি পুড়িয়েছে, মা-বোনদের ধরে এনে পাকসেনাদের হাতে তুলে দিয়েছে তাদের বিচার বাংলার মাটিতেই হচ্ছে। দুর্ভাগ্য আজকে বিএনপি কথা বলে না। ওই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরোধিতা করে হরতাল ডেকে গাড়ি থেকে নামিয়ে গায়ে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করে। তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির জনককে হত্যার পর জিয়াউর রহমান এ বিচার বন্ধ করে দেন এবং যুদ্ধাপরাধীদের ছেড়ে দেন। অনেককে দেশে-বিদেশে রাজনীতিতে এবং চাকরিতে পুনর্বাসন করে শহীদদের সাথে বেঈমানি করেন। আমরা কথা দিয়েছিলাম জনগণ আমাদের ক্ষমতা দিলে এ যুদ্ধাপরাধী মানবতাবিরোধীদের বিচার করব। আমরা সেই কাজ করেছি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার যখন ক্ষমতায় আসে, তখন দেশের কল্যাণে কাজ করে। তখনই কেবল দেশের মানুষ কিছু পায়। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারসহ দেশে খাদ্য স্বয়সম্পূর্ণতা অর্জন, শিক্ষাক্ষেত্রে সাফল্য, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা, দারিদ্র্য দূরীকরণ, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেবা এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথাও তিনি উল্লেখ করেন।
বর্তমান সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে সাংসদ আলী আজগার টগর আরো বলেন, ১৯৯৬ সালে তার সরকার গ্রামীণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ১৫ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করেছিলো। কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর তা বন্ধ করে দেয়। কারণ তারা জনগণের সরকার ছিলো না। তারা ক্ষমতায় যায় কেবলই দেশের সম্পদ লুটেপুটে খাওয়ার জন্য। আমরা সেগুলো চালু করেছি। সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য দারিদ্র্য বিমোচনে দারিদ্র্য ভাতা, বিধবা ভাতাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। এছাড়াও ডিজিটাল বাংলাদেশ চালুর অংশ হিসেবে প্রতিটি ইউনিয়নে ই-তথ্য সেবাকেন্দ্র চালু করা হয়েছে। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য কম্পিউটার শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। তিনি বলেন, শিক্ষা নীতিমালায় আমরা ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করাসহ কারিগরি শিক্ষা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ভোকেশনাল শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়েছি। যাতে অর্থনৈতিকভাবে তাদের স্বাবলম্বী করা যায়। তিনি আরও বলেন, যারা ভূমিহীন, নিঃস্ব ছিলো আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের ঘরবাড়ি নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে।
জনসভায় আরো বক্তব্য রাখেন জীবননগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু মো. আব্দুল লতিফ অমল, মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুত সমিতির উপ-মহাব্যস্থাপক মো. হাবিবুর রহমান, জীবননগর পৌর মেয়র মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, উথলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন খাঁন, আওয়ামী লীগ নেতা জালাল উদ্দীন ও আফরোজা বেগম। এছাড়া আওয়ামী লীগ নেতা জসিম উদ্দীন জালাল, মীর মখলেছুর রহমান টজো, পৌর কাউন্সিলর আবুল কাশেম, ওয়াসিম রাজা, ইউপি সদস্য মিলনুর রহমান, আব্দুস সালাম ঈশা, ফরজ আলী, রফিকুল ইসলাম ওহিনুর, প্রভাষক আলম হোসেন, রওশন আলী, জুয়েল, রফি, ওজা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।