জীবননগরের আন্দুলবাড়িয়ায় ক্যাশবাক্সের ড্রয়ার ভেঙে টাকা চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত দুই সদস্যকে ধরে পুলিশে দিলো জনতা

 

জীবননগর ব্যুরো/আন্দুলবাড়িয়া প্রতিনিধি: ক্যাশবাক্সের ড্রয়ার ভেঙে টাকা চুরি, মোটরসাইকেল চুরি ও বিভিন্ন ছিনতায়ের সাথে জড়িত  ভদ্রবেশী সক্রিয় দু সদস্যকে স্থানীয় জনতা পাকড়াও করেছে। ক্যাশ ড্রয়ার ভেঙে টাকা চুরি করে পালিয়ে ভাইরা ভাইয়ের বাড়িতে আশ্রায় নেয়ার পর স্থানীয় জনতা গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে জীবননগরের আন্দুলবাড়িয়ায় বাড়ি ঘেরাও করে তাদের আটক করে গণধোলায় দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। গণধোলায় দেয়াকালে সরল স্বীকারোক্তি দেয়ার পর জনতা দু চোরের নিকট থেকে চুরি করা টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে।

স্থানীয়রা বলেছে, জীবননগর, দর্শনা, আন্দুলবাড়িয়া, সরোজগজ্ঞ, ডাকবাংলা, ডিঙ্গেদহ, কালোপোল ও গ্রীসনগর বাজারে সম্প্রতি চুরি বেড়ে যায়। এরই এক পর্যায়ে দুজনকে ধরে পুলিশে দিলো জনগণ। পুলিশ দু সদস্যকে থানা হেফাজতে নিয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। আটককৃতরা নিজেদের পরিচয় দিতে গিয়ে বলেছে, স্বপন চুয়াডাঙ্গা দৌলাতদিয়াড়ের আব্দুলের ছেলে আর রুবেল চুয়াডাঙ্গা রেলকলোনির মৃত সাঈদের ছেলে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের গ্রীসনগর বাজারে মোজাম্মেল হোসেনের ওষুধ ফার্মেসির ক্যাশ ড্রয়ার ভেঙে প্রায় ৫০ হাজার টাকা চুরি করে মোটরসাইকেল যোগে আন্দুলবাড়িয়ার দিকে পালিয়ে যায়। দোকানি পাশের দোকানে চা পান শেষে ক্যাশ ড্রয়ার ভাঙা দেখে তিনি চাঁনপুর ও আন্দুলবাড়িয়া এলাকার পরিচিত জনদের নিকট মোবাইল করেন। ফোন পেয়ে চাঁনপুর গ্রামে জনতা সড়কে ব্যারিকেড দেয়। মোটরসাইকেলচালক জনতার ব্যারিকেড ভেঙে পালিয়ে যায়। অবস্থা বেগতিক দেখে আন্দুলবাড়িয়ার দরগাপাড়ার মৃত নূর হোসেনের ছেলে ঘটক দবিবুর রহমানের বাড়িতে টাকা চোরচক্রদ্বয় আশ্রায় নেয়।

দবিবুর রহমানের স্ত্রী শিরিন আক্তার বলছেন, স্বপন বোনের স্বামী ও রুবেল বাপেরবাড়ির প্রতিবেশী সর্ম্পকে ভাই। শিরিন আক্তার স্থানীয় জনতা ও পুলিশি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানান, স্বপন ও রুবেল ফোন করে জানায় আমরা আসছি। ভগ্নিপতি ও ভাই আসার কথা শুনে আমি ডিম পরোটা ও ভুনা গোশতর আয়োজন করি। বাড়ির মধ্যে তারা প্রবেশ করতেই স্থানীয় জনতা বাড়ির মধ্যে ঢুকে চোর ছিনতাইকারী বলে মারধোর শুরু করে দেয়। তাদের নিকট থাকা টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেয়। এ সময় হইচই শুনে উৎসুক নারী-পুরুষ বাড়ির ভেতর ও বাইরে ভীড় জমায়। খবর পেয়ে শাহাপুর ক্যাম্প ইনর্চাজ এসআই শ্যামল সমদ্দার সঙ্গীয় র্ফোসসহ ধৃত চোর চক্রের দু সদস্যকে গ্রেফতার করে থানা হেফাজতে নেন।

সূত্র জানান, সম্প্রতি জীবননগর বিজিবি ক্যাম্পের পাশে কামাল মোটরস, আন্দুলবাড়িয়া বাজারে ডিম হাউস, সংসার বাসনালয়, ভৌমিক ক্রোকারিজ, ডাকবাংলা বাজারে আমিন অ্যান্ড ব্রাদাস, সরোজগজ্ঞ বাজারে জহুরুল বাণিজ্যলয়ের মালিক জয়নাল হাজি, কালোপোল বাজারে ভাই ভাই ট্রেডার্সে, গ্রীসনগর বাজারে মোজাম্মেল ফার্মেসি, ডিঙ্গেদহ বাজার ও দর্শনায় কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্টানে প্রতারকচক্র ঠাণ্ডা পানি খাওনোর কথা বলে ও কখনও ব্যবসায়ীর অনুস্থিতিতে ক্যাশবাক্সের ড্রয়ার ভেঙে টাকা চুরির ঘটনা ঘটে। এসব চুরির ঘটনা সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা গতকাল জনতার হাতে ধরা পড়া এই চোর সেই চোর বলে সানাক্ত করেন।

এছাড়াও ডুমুরিয়া গ্রামের মশিউর রহমান, আন্দুলবাড়িয়া গ্রামের শেখ সাহেব আলী ও অনন্তপুর গ্রামের শাহারুল ইসলামের মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় আটককৃতরা জড়িত বলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাক্তিগণ দাবি করেন। অনেকে আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। তবে আশ্রয়দাতাকে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন বলে এলাকাবাসী দাবি করছেন।