জিনের ভয় দেখিয়ে দামুড়হুদার ছয়ঘরিয়ায় স্কুলছাত্রীর দেহভোগ : অন্তঃসত্ত্বা গর্ভের সন্তান নষ্ট : অবশেষে দু লাখ টাকায় রফা

দর্শনা অফিস: দামুড়হুদার ছয়ঘরিয়া গ্রামের বহুল সমালোচিত ভণ্ড কবিরাজ আলেফ মুন্সি স্কুলছাত্রীকে ফুঁসলিয়ে দেহভোগ করে। অন্তঃসত্ত্বার অভিযোগে তাকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও সম্প্রতি জামিনে মুক্ত হয়েছে। স্কুলছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে আলেফ মুন্সির বিরুদ্ধে থানায় দায়ের করেন মামলা। সে সময় ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্কুলছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা ও আদালতে জবানবন্দি রেকর্ড শেষে পরিবারের হেফাজতে দেয়া হয়। লোক জানাজানির ৬ দিনের মাথায় ঘটে দুর্ঘটনা। স্কুলছাত্রীর গর্ভের সন্তান হয় নষ্ট। এ নিয়ে গোটা গ্রামে শুরু হয় নানামুখি গুঞ্জন। সন্তান নষ্ট হওয়ার নেপথ্যে কি- তা উন্মোচনসহ আলেফ মুন্সির শাস্তির দাবিতে ফুঁসে রয়েছে গোটা গ্রামের মানুষ। আদালত থেকে জামিনে হাজত মুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরে আলেফ মুন্সি ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্কুলছাত্রীর পরিবারকে ম্যানেজের প্রক্রিয়া শুরু করে। অবশেষে সফল হয়েছে আলেফ মুন্সি। গ্রামের কতিপয় মাতব্বরকে হাতের মুঠোয় নিয়ে সপ্তাহ খানেক আগে বসানো হয় সালিসসভা। এ সভায় আলেফ মুন্সিকে দু লাখ টাকা জরিমানার মাধ্যমে ধর্ষণ ও গর্ভপাতের মতো একটি জঘণ্যতম ঘটনার মীমাংসা করা হয়েছে। এতে গ্রামের মানুষ হয়েছে হতবাক। সালিসসভায় নগদ ১ লাখ টাকা পরিশোধ করেছে আলেফ মন্সি। বাকি ১ লাখ টাকা স্কুলছাত্রীর বাবাকে ১ মাস পরে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। দামুড়হুদা উপজেলার পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের ছয়ঘরিয়া দক্ষিণপাড়ার নয়ন মুন্সির ছেলে আলেফ মুন্সি।

স্কুলছাত্রীর অভিযোগে জানা যায়, প্রায়ই সন্ধ্যার পর আলেফ মুন্সি চিকিৎসা দেয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিতো তাকে। আলেফকে দাদা বলে ডাকতো স্কুলছাত্রী। জিন-ভূতের ভয় দেখিয়ে ৫/৬ মাস আগে তাকে ধর্ষণ করে। কাউকে বললে জিন-ভূত দিয়ে স্কুলছাত্রীকে মেরে ফেলার ভয় দেখাতো আলেফ মুন্সি। জিন-ভূতের হাত থেকে নিজে ও বাবা-মাকে রক্ষার জন্য মুখ খুলতে সাহস না পেলেও তার শারীরিক পরিবর্তন দেখে বুঝে ফেলে পরিবারের লোকজন। পরিবারের পক্ষ থেকে নানা কৌশল অবলম্বন করা হলে ঘটনা খুলে বলে সে। এ কথা ছড়িয়ে পড়ে গোটা গ্রামে। গত ২৯ আগস্ট রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দামুড়হুদা থানার এসআই শিকদার মনিরুল ইসলাম মনির সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে গ্রামবাসীর সহযোগিতায় আলেফকে গ্রেফতার করেন। এদিকে আলেফ মুন্সি গ্রেফতারের ৬ দিনের মাথায় স্কুলছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। হাসপাতালের চিকিৎসকরা বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জানান, স্কুলছাত্রীর গর্ভের সন্তান মারা গেছে। গর্ভের সন্তান মরে যাওয়া নিয়ে গোটা গ্রামে শুরু হয়েছে তোলপাড়।