জালালকে পাল্টে হাফিজকে দায়িত্ব অর্পণ:আবু বক্করের দৌঁড়ঝাঁপ

 

কেরুজ মিলগেট সার গোডাউনে কৃষকদের ঋণের সার চুরি ঘটনার তদন্ত চলছে

 

দর্শনা অফিস: কেরুজ চিনিকলের সার গোডাউনের অভিযুক্ত ইনচার্জ চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক জালাল উদ্দিনকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। তার স্থলে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সিআইসি হাফিজুল ইসলামকে। অভিযুক্ত মিলগেট সার গোডাউন ইনচার্জ বহুল আলোচিত আবু বক্করের বিরুদ্ধে চলছে তদন্ত। আগামীকাল তদন্ত সম্পন্ন করে প্রতিবেদন দাখিলের প্রস্তুতি নিতে পারে তদন্ত কমিটি। সার চুরি করে কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক আবু বক্কর তদন্ত কমিটিকে ম্যানেজ করতে দৌঁড়ঝাঁপ থামায়নি। এবার ফসকা গেরোয় ফঁসকে যাওয়ার সম্ভাবনা কম। বর্শা গেরোয় আটকে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আবু বক্করের শাস্তির দাবিতে অনড় রয়েছে ভুক্তভোগী আখচাষিরা। এখন অপেক্ষার পালা কী প্রতিবেদন দাখিল করে তদন্ত কমিটি।

তবে মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষিবিদ আজিজুর রহমান বলেছেন, আখচাষিদের সুবিধা ও স্বার্থে যেকোনো সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে পিচুপা হবেননা। অভিযোগের প্রমাণ মিললে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোরতম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। গত সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কৃষকরা সার উত্তোলন করতে আসে মিলগেট সার গোডাউনে। কৃষকদের জমির হিসাব মোতাবেক ঋনে দেয়া হয় ৫০ কেজির বস্তা ইউরিয়া ও টিএসপি সার। কৃষকরা উত্তোলনের পরপরই অন্যত্র ওজন করে সার। এতে ইউরিয়া সারের ৫০ কেজির বস্তায় ৫/৬ কেজি ও টিএসপি সারের ৫০ কেজির বস্তায় ৮/১০ কেজি কম পাওয়া যায়। এ ঘটনায় আবু বক্করের শাস্তির দাবিতে মিলগেট সার গোডাউন এলাকায় কৃষকরা বিক্ষোভ শুরু করে। খবর পেয়ে মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষিবিদ আজিজুর রহমান দ্রুত ঘটনাস্থলে পাঠান এডিএম আব্দুল কাইয়ুমকে। আব্দুল কাইয়ুমের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে আখচাষিরা। তিনি ঘটনাস্থলে অনেকটাই অভিযুক্ত সার চোর আবু বক্করের কথা বলে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছেন। পরে ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজিজুর রহমান ঘটনার সঠিক তদন্তের জন্য গঠন করেন তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি। এ কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে মিলের ডিজিএম সম্প্রসারণ আলাউদ্দিন। অন্যরা হলেন- সহকারী ব্যবস্থাপক (পার্সনাল) আব্দুল ফাত্তাহ ও সহব্যবস্থাপক (হিসাব) শাহদত হোসেন।

তদন্ত কমিটির প্রধান এসএম আলাউদ্দিন বলেছেন, মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নির্দেশে সঠিকভাবে তদন্ত কার্যক্রম চলছে। কৃষকদের ঠকিয়ে কেউ পার পাবেনা। কাল রোববার পর্যন্ত তদন্ত কার্যক্রম চলবে। যেকোনো দিন লিখিত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষিবিদ আজিজুর রহমানের কাছে।

সূত্র বলেছে, আবু বক্কর ও জালাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যত্যা মিলেছে। এদিকে গত বৃহস্পতিবার চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক জালাল উদ্দিনকে প্রধান সার গোডাউনের ইনচার্জের পদ থেকে সরিয়ে সেখানে মোমিনপুর সেন্টারের সিআইস হাফিজুল ইসলামকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আবু বক্করের কাছ থেকে প্রতারিক কৃষকরা এখন তাকিয়ে আছে তদন্ত কমিটির দিকে। আখচাষি কৃষককূল আবারো সঠিক তদন্তপূর্বক অভিযুক্ত সার চোর আবু বক্করের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজিজুর রহমানের সুদৃষ্টি কামনা করেছে।