জমি নিয়ে আত্মীয়দের লোলুপ আচরণ প্রত্যক্ষের হাসপাতালে মারা গেলেন ভেদামারী গ্রামের ইসলাম মণ্ডল

 

স্টাফ রিপোর্টারঃ  জমি নিয়ে আপন আত্মীয়দের লোলুপ আচরণ প্রত্যক্ষ করার পর কুষ্টিয়া হাসপাতালে মারা গেলেন ভেদামারী গ্রামের ইসলাম মণ্ডল । তিনি বেশ কিছুদিন ধরে কিডনি রোগে ভুগছিলেন। সম্পত্তির লোভে স্ত্রী ও তার আত্মীয়স্বজনরা তাকে কৌশলে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ইসলাম মণ্ডলের ভাই ও তার ছেলেরা।

ভুক্তভোগী পরিবার ও গ্রামসূত্রে জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদাহ ইউনিয়নের ভেদামারী গ্রামের মৃত ইজ্জত আলী মণ্ডলের ছোট ছেলের সাথে আলমডাঙ্গার বড়পুটিমারী গ্রামের মকছেদ আলীর মেয়ে ভুলি খাতুনের বিয়ে হয়। দীর্ঘদিন পরে তাদের একটি ছেলে সন্তান হয়। একমাত্র সন্তান কোরবান ২০০৫ সালে বিষপানে আত্মহত্যা করে। ছেলেকে হারিয়ে বাবা  ইসলাম মণ্ডল তখন থেকেই অসুস্থ। বছর খানেক আগে তিনি জটিল কিডনি রোগে আক্রান্ত হন। নিয়মিত চিকিৎসা না করার কারণে রোগ আরও জটিল হয়ে পড়ে। এদিকে স্ত্রী ভুলি খাতুন তার স্বামীর চিকিৎসার চেয়ে তার জমি-জায়গা রেজিস্ট্রি করে নেয়ার জন্য উদগ্রিব ছিলেন। জমি লিখে দেয়ার জন্য জবরদস্তি করে আসছিলেন দীর্ঘদিন ধরে। এমনকি তিনি স্বামীকে গালাগালিসহ মারধরও করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে গ্রামে। এ অবস্থা দেখে ইসলাম মণ্ডল তার একমাত্র জীবিত ভাই রফিউদ্দিন মণ্ডল ও ভাইয়ের ছেলেদের সাথে পরামর্শ করে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। পাসপোর্ট ও ভিসা লাগানো সম্পন্ন হয়। গত ১২ আগস্ট শুক্রবার রাতে খুবই অসুস্থ হয়ে পড়েন ইসলাম মণ্ডল। তাকে নেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানেই চিকিৎসা চলছিলো। নাকে অক্সিজেন ও শরীরে অনবরত দেয়া হচ্ছিলো সেলাইন। এক পর্যায়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কিডনি বিভাগের চিকিৎসকরা রোগীকে ক্লিনিক্যালি ডেড ঘোষণা করেন। ১৪ আগস্ট চিকিৎসকদের শেষ দফা চেষ্টায় কিছুটা জ্ঞান ফেরে রোগীর। সে দিন টাকার প্রয়োজনে রোগীর ভাই ও ভাইয়ের ছেলেরা গ্রামে চলে আসেন। এই সুযোগে ইসলাম মণ্ডলের স্ত্রী ভুলি খাতুন, তার ভাই হায়দার আলী, অপর ভাই সিদ্দিকুর রহমান, ভাইয়ের ছেলে লিটন হোসেন মিলে মুমূর্ষু ইসলাম মণ্ডলকে ঢাকার কিডনি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ১৬ আগস্ট গোপনে মাইক্রোবাসযোগে ঢাকার পরিবর্তে নেয়া হয় আলমডাঙ্গা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুয়ায়ী আলমডাঙ্গা সাব রেজিস্ট্রি অফিসের মহুরার বিল্লাল হোসেনের যোগসাজশে ইসলাম মন্ডলের নামের ৩ একর ৬২ শতক ৮৫ পয়েন্ট জমি ১৬ আগস্ট স্ত্রী ভুলি খাতুন তার নিজ নামে রেজিস্ট্রি করিয়ে নেন।

এদিকে, এ ঘটনার পর ইসলাম মণ্ডলকে ভুলি খাতুন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।