চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের চার শিক্ষককে মেহেরপুর বদলি

নবম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী সুরাইয়া সুলতানা রিমুর আত্মহত্যা : গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্ত শেষে প্রতিবেদনের সুপারিশ

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী সুরাইয়া সুলতানা রিমুর আত্মহত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে  চারজন সহকারী শিক্ষককে স্ট্যান্ডরিলিজ করা হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকের নির্দেশে তাদেরকে মেহেরপুরে বদলি করা হয়। ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকের পক্ষে সহকারী পরিচালক (মাধ্যমিক-১) সাখায়েত হোসেন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র বলেছে, ৪ শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজুর বিষয়টি বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন।

বদলি আদেশপ্রাপ্ত চার শিক্ষক হলেন- গণিত বিভাগের তিন শিক্ষক হাসানুজ্জামান হেদায়েত, মাসুদুর রহমান ও রহিমা খাতুন এবং বাংলা বিভাগের সহকারী শিক্ষক ওয়াহিদা পারভীন পপি। এদের মধ্যে দু শিক্ষককে মেহেরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও দু শিক্ষিকাকে মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শূন্যপদে পদায়ন করা হয়েছে। চার শিক্ষকই গতকাল সোমবার নিজ নিজ বিদ্যালয়ে যোগদান করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৩ ডিসেম্বর বার্ষিক গণিত পরীক্ষা খারাপ হওয়ায় নবম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী সুরাইয়া সুলতানা নিজ বাড়িতে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। সুরাইয়ার আত্মহত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরদিন দুপুরে বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা বিদ্যালয়ের সামনের সড়ক অবরোধ করে। আন্দোলনরত ছাত্রীরা আত্মহত্যার পেছনে সিলেবাসের বাইরে থেকে গণিতের প্রশ্নপত্র তৈরি, পরীক্ষা চলাকালে কক্ষ পরিদর্শকের আচরণ ও প্রাইভেট পড়তে শিক্ষকদের অনৈতিক চাপকে দায়ী করে।

বিদ্যালয়ের সভাপতি জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাককে আহ্বায়ক করে ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত শেষে কমিটি ১৪ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে মোট ১০ দফা সুপারিশ করা হয় অভিযুক্ত চার শিক্ষকের বিরুদ্ধে বদলিসহ বিভাগীয় মামলা করার।

চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার মালাকার জানান, বিদ্যালয়টিতে ৫১ জন শিক্ষকের পদ থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে মাত্র ২৮ জনকে দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালানো হচ্ছিলো। যার মধ্যে চলতি মার্চ মাস থেকে বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষক আতিয়ার রহমান ও ইংরেজির শিক্ষক মনিরুল ইসলাম এক বছর মেয়াদী বিএড কোর্সে যশোরে রয়েছেন। চারজনকে বিমুক্ত করার পর বর্তমানে ২২ জন শিক্ষক রয়েছে। এই শিক্ষক স্বল্পতার বিষয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও জেলা প্রশাসকের সাথে আলোচনা করে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

প্রসঙ্গত, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর তা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকের কাছে পাঠান এবং সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তাকে অবগত করেন। যার প্রেক্ষিতে ওই চারজন শিক্ষককে বদলি করা হলো।